ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে আবাদি জমি রক্ষা করুন

| বুধবার , ১ জুন, ২০২২ at ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ

শহরের পাশাপাশি এখনও গ্রামাঞ্চলেও আবাদিঅনাবাদি জমিতে একটি নির্দিষ্ট লেখার সাইনবোর্ড খুব কমন হয়ে গেছে। সে লেখাটিতে গ্রুপের নাম ভিন্ন হলেও সাইট ফরলেখাটি থাকছে। এ চিত্র তৈরি হয়েছে দেশের বড়বড় শিল্পগ্রুপ গুলোর কারণে। তারা যেভাবে আগ্রাসী পদ্ধতিতে জমি কেনা শুরু করেছে তাতে অতীতের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কথা পুনরায় আলোচনায় আসছে। সরকার ব্যক্তি মালিকানায় ৬০ বিঘার বেশি জমি ক্রয় করা যাবে না মর্মে আইন করলেও শিল্পগ্রুপ বা প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানায় জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয় নি। ব্যক্তি মালিকানার ক্ষেত্রেও পরিমাণ বেশি হয়ে গেছে বলে জনমনে ধারণা থাকলেও সিদ্ধান্তটি আপাতদৃষ্টিতে সাধুবাদযোগ্য। বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের গড় জমির পরিমাণ ৩/৪ শতক।

পরিবারের লোকসংখ্যার বৃদ্ধির সাথে সাথে সে পরিমাণ জমিতে বসবাস যখন কষ্টের হয়ে পড়ে তখন পরিবারের উপার্জনক্ষম মানুষের বিশেষত চাকুরিজীবী বা প্রবাসী সদস্যের দীর্ঘদিনের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে নতুন ২/৩ শতক জায়গা ক্রয়ের ইচ্ছা করে। কিন্তু একজন চাকুরিজীবী বা প্রবাসী দীর্ঘ ৫/৭ বছর ব্যাংক বা বীমায় যে পাঁচসাত লাখ টাকা জমা করে তা দিয়ে বর্তমানে জমিক্রয় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ হিসেবে দেখা গেছে শিল্পগ্রুপগুলো অনেক আগেই উচ্চদামে জায়গাগুলো ক্রয় বা বায়না করে রেখে প্রান্তিক শ্রেণির জমিক্রয়কে অসাধ্যে পরিণত করেছে। তাদের একটুকরো স্থায়ী ঠিকানার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। জমির উচ্চমূল্যের পাশাপাশি শিল্পগ্রুপ গুলোর আগ্রাসী দৃষ্টির কারণে খাদ্যশস্যের উৎপাদনের গ্রাফও প্রতিনিয়ত নিম্নমুখী হচ্ছে। আবাদি জমির উপর শিল্পগ্রুপ গুলোর আগ্রাসী দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দেশে শ্রীলংকার মতো খাদ্যাভাব দেখা দেয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিল্পগ্রুপের জমি ক্রয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নচেৎ, লক্ষ লক্ষ মানুষের ভূমিহীন হবার সমূহ সম্ভাবনার সাথে রাষ্ট্রীয় কাঠামোও শিল্পগ্রুপ গুলোর নিয়ন্ত্রণে যাবে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

মোহাম্মদ শফিউল আলম

চট্টগ্রাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া : বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক
পরবর্তী নিবন্ধহালদা ভাঙ্গে; হালদা বদলায়; বিশ্বজিৎ গড়ে-এগিয়ে যায়