ভুয়া পরিচয়ে রোগী দেখেছেন তিন বছর, অবশেষে গ্রেপ্তার

চকরিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৭ মে, ২০২২ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

আসল নাম ফরিদ উদ্দিন। তবে তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন ডাক্তার মাঈন উদ্দিন হিসেবে। ইতোপূর্বে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ার বেশ কিছু জায়গায় তিন বছর ধরে ছদ্মনামে রোগীও দেখেছেন। বলতেন তিনি একজন এমবিবিএস ডাক্তার। সেজন্য এখানকার মানুষ তাকে ছদ্মনামেই (মাঈন উদ্দিন) চেনেন। অবশেষে বেরিয়ে এলো তার আসল রূপ। নতুন করে পরিচিতি ফেলেন তিনি। সকলে জানতে পারলেন তিনি আসলে একজন ভুয়া ডাক্তার। আর এ ভুয়া ডাক্তারের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। সম্প্রতি চকরিয়া পৌরশহরের প্রাইভেট হাসপাতালে (সিটি হাসপাতাল) ডাক্তার (মেডিক্যাল অফিসার) নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলে সেখানেও আবেদন করেন তিনি। গত ১৪ মে নিয়োগের জন্য তার মৌখিক পরীক্ষা (ভাইবা) সম্পন্ন হয়। কিন্তু আবেদনের সঙ্গে তার দাখিলকৃত কাগজপত্রে সন্দেহ দেখা দিলে সেই খবর পৌঁছানো হয় উপজেলা প্রশাসনে। এরপর গতকাল সোমবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাহাত উজ-জামান অভিযান চালিয়ে ছদ্মনামধারী এ ভুয়া ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তিনি দোষ স্বীকার করার পর আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। কিন্তু জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাকে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অভিযান, কারাদণ্ড ও অর্থ জরিমানার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. রাহাত উজ-জামান। তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, এই ভুয়া ডাক্তারের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। গোপন সংবাদ পেয়ে তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় সে ছদ্মনামই (মাঈন উদ্দিন) বার বার বলছিল। পরে যখন তাকে বলা হলো যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকেন তাহলে জেল থেকে বের হওয়ার সময় কিন্তু আপনার এনআইডি যাচাই করবে জেল কর্তৃপক্ষ। তখনই সে নিজের আসল নাম ফরিদ উদ্দিন এবং সে প্রায় তিন বছর ধরে চকরিয়া ও পেকুয়ায় এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগী দেখে আসছিলেন বলে স্বীকার করেন। তার বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বলেও আদালতকে জানায়।
সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপকের বরাত দিয়ে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, এই ভুয়া ডাক্তার গত ১৪ মে হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ পেতে ভাইবা দিতে আসেন এবং কাগজপত্র দাখিল করেন। তিনি ইতোপূর্বে চকরিয়া ও পেকুয়ায় ডাক্তার হিসেবে প্র্যাকটিস করায় পরিচিতিও লাভ করেন। তাই সিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়ে প্রথমে সন্দেহ করেনি। তবে পরে সে যে ভুয়া তা বুঝতে পেরে প্রশাসনকে জানায়। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার ও সাজা প্রদান করে।
এই প্রসঙ্গে চকরিয়া পৌরশহরের প্রাইভেট সিটি হাসপাতালের ডিএমডি হেফাজত রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, এই ভুয়া ডাক্তার কয়েকবছর ধরে চকরিয়া ও পেকুয়ার রোগী দেখেছেন। সেই সুবাদে মানুষের কাছে পরিচিতিও পেয়েছিলেন। তাই তাকে নিয়োগের জন্য আবেদনের সাথে দাখিলকৃত কাগজপত্রগুলো যাচাইয়ের সময় সন্দেহ হলে প্রশাসনে খবর পৌঁছানো হয়। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার এবং সাজা প্রদান করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথম দিনে দুই চেয়ারম্যানসহ ৪১ প্রার্থীর মনোনয়ন জমাদান
পরবর্তী নিবন্ধডা. জাফরুল্লাহর প্রস্তাবিত জাতীয় সরকারে যারা আছেন