ভালোবাসার অপর নাম ‘দৈনিক আজাদী’

বিভাস গুহ | রবিবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

প্রতিদিন ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে যে কাগজটি গোটা বিশ্বকে চোখের সামনে নিয়ে আসে সেটাই দৈনিক আজাদী। চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের বিশ্বাস ও ভালোবাসার অপর নাম দৈনিক আজাদী। দীর্ঘদিন ধরে এ পত্রিকার সগর্ব পদচারণা। সূচনালগ্ন থেকেই সত্যের সাথে সবসময় এ পত্রিকার সন্ধি। তাই গ্রামে গঞ্জে শহরে নগরে এ পত্রিকাটি হয়ে উঠেছে প্রতিটি মানুষের আস্থার ঠিকানা এবং প্রতিদিনকার জীবনের অপরিহার্য অংশ।
এ বছর এ পত্রিকাটির ৬১ বছর পূর্ণ হল। সুদীর্ঘ ৬১ বছর ধরে বিরামহীন পথ চলা সত্যিকার অর্থেই গর্বের। মানুষের আশা ভালোবাসা চাওয়া পাওয়ার পুরোটাই পূরণ করতে পেরেছে বলে আজ এতদূর আসতে পেরেছে এবং অত্যন্ত দাপটের সাথে টিকে আছে। সত্যের পথে পথ চলা অব্যাহত ছিল বলে এতটুকু পথ সফলতার সাথে পেরিয়ে এসেছে।
সমাজ সংসার দেশ বিদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ক্রীড়া, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বিনোদন অঙ্গনের সমস্ত খবর ঘুম থেকে উঠেই এক নিমিষেই যেখানে পেয়ে যাই সেটাই আজাদী। সত্য প্রকাশে অত্যন্ত দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সাহসিকতায় অনন্য। সংবাদের জন্য সর্বস্তরের মানুষের আস্থা, বিশ্বাস এবং ভরসার এক সুনিপুণ ঠিকানা এ আজাদী। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম ও প্রতিবাদে এ পত্রিকার রয়েছে গৌরবময় একটা ভূমিকা ও সাফল্য। যার জন্য অধিকাংশ পরিবারের সকাল বেলার চায়ের টেবিলের অপরিহার্য অংশ হয়ে পড়েছে এ দৈনিক পত্রিকাটি। দীর্ঘ ৬১টি বছর ধরে পুরো বিশ্বকে চোখের সামনে নিয়মিত তুলে ধরা সত্যিকার অর্থেই অবাক করার মত এবং রীতিমত কঠিনও। আর এ কঠিন কাজটিই নিয়মিত করে চলেছে দৈনিক আজাদী। সত্য যে কঠিন সে কঠিনেরে ভালোবাসিলাম। এ কঠিন কাজটি করতে নেপথ্যে যাঁরা অবদান রেখে চলেছেন তাঁদের অনেককেই আমরা চিনি না বা জানি না। কিন্তু তারা আমাদের কাছে সংবাদ ঠিকই সময়মতো পৌঁছে দিচ্ছে। দাঙ্গা হাঙ্গামা গোলাগুলি সহিংসতা এমনকি করোনার এ দুঃসময়ে লকডাউন চলাকালীন সময়ে সাধারণ মানুষ যেখানে ঘরবন্দি অবস্থায় পরিবারের সাথে টিভির পর্দায় আর সংবাদপত্রের পাতায় চোখ রেখে সময় পার করেছে সেখানে সংবাদকর্মীরা হাটে মাঠে ঘাটে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা রোগীদের পাশে গিয়ে পরম যত্নে তাঁর অবস্থার কথা জেনে নিয়ে আমাদের পৌঁছে দিয়েছেন রিপোর্টের মাধ্যমে রোগীর সংবাদ। দাঙ্গা হাঙ্গামা গোলাগুলি এবং সহিংসতার মধ্যে নিজের জীবনকে বাজি রেখে সংবাদ সংগ্রহ করে আমাদের চায়ের টেবিলে এনে দিচ্ছে। আমরা চায়ে চুমুক দিয়ে সংবাদটা পড়ে পরবর্তী সংবাদে চোখ বুলিয়ে যাই কিন্তু এ সংবাদ সংগ্রহে কী পরিমাণ কষ্ট এবং ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তা একমাত্র সংবাদ কর্মীই জানে। কত ঘাত প্রতিঘাত কত আঘাতের চিহ্ন যে তাঁদের শরীরে রয়েছে তার খবর কিন্তু আমরা জানি না।
সংবাদ সংগ্রহ করা একজন সংবাদকর্মীর শুধু দায়িত্ব বা পেশাই নয় এটা তাঁর নেশা এবং এতেই তাঁর আনন্দ। সংবাদপত্রের প্রতিটি শব্দে বাক্যে লুকিয়ে থাকে সংবাদকর্মীর ভালোবাসা, ও কষ্ট ভরা ইতিহাস তা আমাদের অজানা। তার মধ্যেও জনগণের কাছে সময়মত সংবাদ পৌঁছে দেওয়াতে সংবাদকর্মীর আনন্দ।
প্রতিদিনের সংবাদে লুকিয়ে থাকে সংসার, পরিবার, সমাজ, দেশ বিদেশের মানুষের ভালোবাসার স্নিগ্ধতার সুমধুর পরশ। কারো কারো বেদনার দীর্ঘশ্বাস কিংবা ব্যর্থতার সকরুণ আর্তনাদ। জয় পরাজয় আনন্দ বেদনার মহাকাব্য, ধর্ম রাজনীতি আর সাহিত্যের ছন্দময় শব্দ চয়নের শ্রুতিমধুর গীতি। রাতের আঁধার ভেদ করে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে হেসে উঠে শব্দগুলো, নিষ্প্রাণ বাক্যগুলো ফিরে পায় প্রাণ। দৈনিক আজাদীর সত্যের অনুসন্ধানে সাহসিকতার সাথে পথ চলা অব্যাহত থাকুক। এগিয়ে যাক দুর্বার গতিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচেরাগী পাহাড়ের মোড়ে গেলেই আজাদী অফিসের দিকে উঁকি মারি
পরবর্তী নিবন্ধপ্রিয় আজাদীর জন্য শুভ কামনা