ভবন ভাঙা হচ্ছে কয়েকদিন ধরে, ছিল না নিরাপত্তা ব্যবস্থা

একটুর জন্য বেঁচে গেছি : পথচারী

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

মো. সেলিম মিয়া। গার্মেন্টস পণ্যের ব্যবসা করেন। বাসা চেরাগী পাহাড় মোড় এলাকায়। প্রতিদিন হাঁটতে বের হন তিনি। গতকাল বিকালেও হাঁটতে বের হয়েছিলেন। তখন সময় বিকাল সাড়ে চারটার কিছু বেশি। জামালখানের দিকে যাচ্ছিলেন। কিছু দূর যেতেই দেখতে পান জটলা। পুলিশফায়ার সার্ভিসের লোকদের দৌড়াদৌড়ি। একটু কাছে গিয়ে দেখতে পান ভবন ধসে পড়েছে। যার কারণেই পুলিশফায়ার সার্ভিসের লোকদের এদিকওদিক ছুটাছুটি। সেলিম মিয়া আর তার পথযাত্রা দীর্ঘ করেননি। থেমে গেলেন। কিছুটা দূরে দাড়িয়ে ঘটনা দেখছিলেন এবং ভাবছিলেন। সন্ধ্যার পর পর্যন্ত তিনি সেখানেই ছিলেন। আজাদীর সাথে আলাপে তিনি জানান, আর একটু হলে তিনিও দুর্ঘটনার শিকার হতেন। যে ফুটপাতে ভবনের অংশ ধসে পড়েছে সে পথটি দিয়েই তিনি প্রতিদিন জামালখান মোড়ে যান। কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করে সেই পথেই বাসায় ফিরে যান। তিনি বলেন, ৪ টার পর তিনি বাসা থেকে বের হন প্রতিদিন। ভবন ধসের ঘটনাও ঘটেছে চারটার পর। যাইহোক একটুর জন্য বেঁচে গেলাম। কয়েকদিন ধরেই ভবনটিতে কাজ চলছিল উল্লেখ করে মো. সেলিম মিয়া আরো বলেন, ভবন ভাঙার কাজ করলেও সেখানে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ফুটপাতটি বন্ধ ছিল না। চোখে পড়েনি কোনো ধরণের নির্দেশনাও।

এ তো গেল পথচারীর নিরাপত্তা না থাকার বিষয়টি। ভবন ভাঙার কাজ করছিলেন যারা তাদেরও নিরাপত্তা ছিল না। কোনো রকম নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার ব্যতীত ভবন ভাঙছিলেন শ্রমিকরা। যেটি সাধারণের পাশপাশি সংশ্লিষ্টদের চোখেও পড়েছে। সাধারণ মানুষ বলছেন, ভবন ভাঙা বা ভবন নির্মাণের সময় দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয় না। ক্ষতি হয় যারা ভবন ভাঙা বা নির্মাণের কাজ করেন তাদেরও। গতকালের জামালখানের ঘটনা তারও সাক্ষী হলো। ভবন ভাঙার সাথে জড়িত দুজন মৃত্যু বরণ করেছেন। তাও আবার শ্রমিক নন, তারা ঠিকাদার। তাদের নেতৃত্বে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। এ ঘটনায় দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্টদের বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিৎ। একই সাথে চসিক সিডিএর মত প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হবে।

এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেছেন, যে কোনো কাজে নিরাপত্তাই প্রথম। সেটি ভবন নির্মাণে হোক, আর ভবন ভাঙার ক্ষেত্রে হোক। কোনো একটি দুর্ঘটনা ঘটলে তখন সবাই নড়েচড়ে বসে। তখন কিছুটা সচেতন হয়। না হলে নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা খুব বেশি উদাসীন। এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের যেমন দায় আছে, তেমনি ভবনের মালিকপক্ষেরও দায় আছে। মালিককে শ্রমিকের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে। কারণ বিপদ কখন আসে বলা যায় না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমূল বেতনের ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মালিক পক্ষের প্রত্যাখ্যান
পরবর্তী নিবন্ধচান্দগাঁওয়ে ফ্রিজের দোকান ও ভবনে আগুন