বোয়ালখালীতে বেসরকারি বাগানে ‘আশা’

খেজুর রস

বোয়ালখালী প্রতিনিধি | বুধবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ১০:০৭ পূর্বাহ্ণ

মাটির গুণাগুণের কারণে বোয়ালখালীর খেজুর রসের স্বাদ অন্যরকম। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় সেই স্বাদ আর ঐতিহ্য এখন আর নেই। সুস্বাদু খেজুর রসে ভিজিয়ে ভাপা পিঠা খাওয়া আর তার ম-ম গন্ধ-এটা কি ‘রূপকথা’ হয়ে যাবে?

এ নিয়ে কথা হয় পূর্ব গোমদন্ডী গ্রামের জাগের হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ দুর্দিনে ২টা খেজুর গাছ কোনোমতে আগলে রেখেছি। কিন্তু গাছির অভাবে গাছ থেকে রস খেতে পারি না। শাকপুরা এলাকার আব্দুল মালেক বলেন, নাতি-নাতনিরা বেড়াতে আসবে জেনে রসের খোঁজে বের হয়েছিলাম। কিন্তু গাছি রস দিতে পারবে না বলায় বেকায়দায় পড়ে গেলাম। পোপাদিয়ার গাছি শুক্কুর বলেন, আগের মতো খেজুরগাছ না থাকায় এখন রসের রমরমা অবস্থা নেই।

শীত এলে নিজের বাড়ির ২/৩টা গাছ শখের বশে কাটি। সামান্য যা রস পাই তা দিয়ে নিজেদের চাহিদা মেটানোও সম্ভব হয় না। একসময় বোয়ালখালী উপজেলার সর্বত্র সারি সারি খেজুরগাছ চোখে পড়ত। কোনো যত্ন ছাড়াই জন্মাত এসব গাছ। শীতের শুরুতে শত শত গাছির দা তৈরি, দড়ি ও মাটির কলস কেনাসহ গাছ পরিষ্কারের ধুম পড়ে যেত। কোমরে রশি পেচিয়ে ধারালো দায়ে গাছ কাটা, কলস বসানো, কাক ডাকা ভোরে ঠিল্লা (কলস) ভর্তি কাঁচা রস কাঁধে নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়া ছিল পরিচিত দৃশ্য। বাড়ির বৌ-ঝিরা সেই রস জ্বাল দিতেন। রস দিয়ে মুখরোচক নানা স্বাদের পিঠা তৈরি হতো। হাড় কাঁপানো শীতের সকালে উনুনের পাশে বসে আয়েশ করে রস দিয়ে পিঠা খাওয়া হতো।

গাছ কমে যাওয়ায় এখন সেই জৌলুস আর নেই। তবে বেসরকারি পর্যায়ে গড়ে ওঠা কয়েকটা বাগান এর মাঝে আশার সঞ্চার করেছে।

মৌসুমী খামার নামে একটা বাগানের কর্মচারী মইন বলেন, আমাদের বাগানে প্রায় দেড়শ গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে প্রতিদিন ৪-৫ লিটার রস পাই। প্রতি লিটার রস ১শ টাকা দরে বিক্রি করি। বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকলেও সেভাবে সরবরাহ দিতে পারি না। তিনি জানান, স্থানীয় পর্যায়ে গাছি পাওয়া যায় না। ভিন্ন জেলা থেকে গাছি ও কাজের লোক আনতে হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আতিকুল্লাহ বলেন, খেজুরগাছ আবাদি জমির ক্ষতি করে না। সড়কপথ, পতিত জমি, ক্ষেতের আইল, পুকুর পাড়, বাড়ির আঙিনায় খেজুরগাছ লাগানো যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি নির্বাচনে না এলে অপূর্ণতা থাকবে : সিইসি
পরবর্তী নিবন্ধরেলওয়ের জমিতে অবৈধ বহুতল ভবন, তদন্তে দুদক