বৈশাখী মেলা

মিতা পোদ্দার | রবিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২৪ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

আর কয়েকদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী লালদিঘির জব্বারের বলী খেলা। ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি বৈশাখী মেলা নামে পরিচিত। এ খেলাটি যেন বাংলার এক অপূর্ব ঐতিহ্য বহন করে চলেছে যুগ যুগ ধরে। ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলা উপলক্ষে কোতোয়ালী মোড় থেকে নিউ মার্কেট, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, আন্দরকিল্লা ও জেল রোড থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত বসবে এই বৈশাখী মেলা।

বিভিন্ন স্থান থেকে বিক্রেতাগণ তিন দিনব্যাপী এই বৈশাখী মেলার আয়োজনে মেতে থাকে। বলী খেলা ও মেলাকে ঘিরে উৎসব চলবে চট্টগ্রামে। বিক্রেতারা হাতপাখা, শীতল পাটি, ঝাড়ু, মাটির কলস, মাটির ব্যাংক, রঙিন চুড়ি, ফিতা, হাতর কাঁকন, বাচ্চাদের খেলনা, ঢাকঢোল, মাটি ও কাঠের পুতুল, বাঁশি, তৈজসপত্র, আসন, চৌকি, খাট, আলমারি, ফুলদানি, তালপাখা, টব, হাঁড়িপাতিল, দাছুরি, কুলাচালুন, টুকড়ি, বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা, মুড়ি, মুড়কি, লাড্ডু, জিলাপির পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তবে মেলায় সবচেয়ে বেশি থাকে ঝাড়ুর চাহিদা। সবার মধ্যে টানাটানা উত্তেজনা থাকে। বিশেষ করে ছোটদের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই শুরু করে কখন তাদের এই কাঙ্ক্ষিত দিনটি ফিরে আসবে। নিজেদের পছন্দসই খেলনা, পুতুল, বন্দুক থেকে শুরু করে কত কী না তাদের প্রয়োজন?

শত বছরের এই সাধারণত মুড়ি মুড়কি বিক্রি করতে আসেন নগরীর বাকলিয়া ও বলুয়ার দিঘির পাড়ের ব্যবসায়ীরা। গাছের চারা থেকে শুরু করে কত কী না ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে। ছোট বেলা থেকেই মেলায় যাওয়ার আগ্রহ জেগে উঠত। শুধু কি তাই এই মেলা থেকে কী কিনব তা আগে থেকেই ঠিক করে নিতাম। বিশেষ করে সেই মাটির হাঁড়ি, পাতিল, বাসন কোসন। পুতুল খেলার দিনগুলোতে ঘর সাজাতে কাঠের সোফা, স্টিলের আলমারি, ওভার ড্রব, শোকেজ, আর রান্নার সামগ্রীতে কিনতাম বটি, গ্যাসের চুলা, মাটির সরা আরো কত কী? কত মজাই না পেতাম? মেলা থেকে আমার সবচেয়ে পছন্দের যেই জিনিসটা কিনতাম সেটা হলো মাটির ব্যাংক। মাটি দিয়ে তৈরি করা আম, আপেল, কাঁঠাল, পেঁপে এই ব্যাংকগুলো আমার খুব পছন্দের। মেলায় গ্রামবাংলার বিভিন্ন লোকজ শিল্পের পাশাপাশি শিশুদের খেলনা, বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী, গৃহস্থালি পণ্য; দাছুরি ও বটি আসবাবপত্রসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসবে দোকানিরা। এ ছাড়া নানা ধরনের হস্তশিল্প এবং ফল ও ফুলের গাছ পসরা সাজাবেন। চট্টগ্রামের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য দেশ ও বিশ্বময় ছড়িয়ে যাচ্ছে এই জব্বারের বলী খেলার মধ্যদিয়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসম্পর্ককে লালন করা দরকার
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে