সাত বছর ধরে কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার পর মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব বৈরিতা ভুলে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে শুরু করতে রাজি হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় রাজধানী বেইজিংয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকের পর সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে এই মতৈক্য হয়। খবর বিডিনিউজের।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, আলোচনার ফলে ইরান ও সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করা এবং দুই মাসের মধ্যে নতুন করে দূতাবাস খুলতে রাজি হয়েছে।
ইরানি ও সৌদি গণমাধ্যম বলেছে, দুই দেশ এক বিবৃতিতে একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা এবং একে অপরের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা দেখানোর ওপর জোর দিয়েছে।
এছাড়া, ২০০১ সালে স্বাক্ষরিত পারস্পরিক নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি কার্যকর করাসহ বাণিজ্য, অর্থনীতি ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত আরও আগের একটি চুক্তিও সচল করতে দুদেশ একমত হয়।
ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলি শামখানি সৌদি আরবের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুসায়েদ বিন মোহাম্মদ আল–আইবানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছেন। দুই দেশের মধ্যে এই সমপ্রীতি এনে দিতে ভূমিকা রাখার জন্য শামখানি চীনের প্রশংসা করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইরানের নূর নিউজ।
সুন্নিপ্রধান সৌদি আরব ও শিয়া প্রধান ইরান মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রভাবশালী দেশ। কয়েকবছর ধরে দেশ দুটির মধ্যে তিক্ততা চলে এসেছে। দুদেশের দ্বন্দ্ব পারস্য উপসাগর এলাকায় যে কেবল উত্তেজনা বাড়িয়েছে তাই নয় বরং ইয়েমেন থেকে সিরিয়া পর্যন্ত সংঘাতকে আরও গভীর করেছে। ওই দেশগুলোর প্রঙি যুদ্ধে বিপরীত পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে সৌদি আরব এবং ইরান। ইয়েমেনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের পক্ষে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট। আর এর বিপরীতে হুতি বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করছে ইরান।
ইরানের ঊর্ধ্বতন এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, শুক্রবার দুই দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে– এর অনুমোদন আগেই দিয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সেকারণেই খামেনির প্রতিনিধি হিসাবে শামখানি চীন সফর করেন। ইরান দেখাতে চেয়েছিল যে, দেশটির শীর্ষ কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।