বিনোদনের নামে ‘বিজাতীয় সংস্কৃতি চর্চা পরিহার করি

মো. নাঈম ইসলাম | বৃহস্পতিবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

আনন্দ ও বিনোদন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতা, অবসাদ আর ক্লান্তিতে বিনোদনই আমাদের জীবনকে করে ফের গতিময় ও প্রাণোচ্ছল। এই আধুনিক ইন্টারনেটের যুগে নেই বিনোদন মাধ্যমের কমতি। কমতি নেই বলেই আমরা হয়তো বিনোদন সাগরে ডুবে হারিয়ে ফেলছি সঠিক ও সুষ্ঠু বিনোদন বিচারের মানসিকতা। যার কুপ্রভাব আমাদের তরুণ সমাজের একটি বৃহৎ অংশের মধ্যে বিদ্যমান। আস্তে আস্তে সেই প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে ব্যক্তি থেকে পরিবার, পরিবার থেকে সমাজ তারপর একটি রাষ্ট্র সর্বোপরি একটি বৃহত্তর জাতির সর্বত্রই।
মূলত, বিনোদন হল মানুষের সুক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক কারসাজি। মানুষ যেটাতে বিনোদন খুঁজে পায়, পায় আনন্দ সেটি সে নিজের মনের সাথেও মিলাতে থাকে। একপর্যায়ে সেই ব্যক্তির জীবনেও প্রকাশ পায় তার ছোঁয়া। এভাবে সে নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে অনুসরণ করতে থাকে অন্য আরেক জনের লাইফস্টাইল বা ভিন্ন দেশের সংস্কৃতি কিংবা ভীনদেশি সমাজের রীতি-নীতি। এই প্রভাব যখন ব্যক্তি থেকে জাতিতে ছড়িয়ে পড়ে তখনই একটি বৃহত্তর জাতি হারিয়ে ফেলে তারা আপন রীতিনীতি ও সংস্কৃতি।
সম্প্রতি আমরা কিন্তু দেখতে পাচ্ছি কীভাবে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিজাতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চালু হয়ে গেছে। যেটি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির সঙ্গে বেমানান। এই বেমানান সংস্কৃতি কিন্তু ভিন্ন কোনো জাতি কিংবা সমাজ থেকে আমদানি করা। অতএব, আমাদের বাঙালি জাতিও যে বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রতি ঝুঁকে পড়েছে সেটা বলতেই পারি। আর এর চরম সীমা যে একটি চরম বিপদের আয়োজন করবে সে শঙ্কা অমূলক কিছু নয়। সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের এমন শঙ্কা তখনই কমবে যখন আমরা ব্যক্তিপর্যায়ে হব সচেতন। আর সচেতনতার সাথে যখন আমরা এড়িয়ে চলব ভিন্ন সমাজের প্রথা, ভিন্ন দেশের সংস্কৃতি এবং একই সাথে উপভোগ করব নিজ দেশ ও জাতির সংস্কৃতি কেবল তখনই। অতএব, আমাদের সংস্কৃতি রক্ষার দায়িত্ব কিন্তু আমার আপনার হাতেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমা আমাদের জীবনের উজ্জ্বল নক্ষত্র
পরবর্তী নিবন্ধমুহাম্মদ মুজিবুর রহমানের ‘দেখা থেকে লেখা’ ও ‘সময় সংলাপ’