বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখা ও কাজ না করে বিল তদন্তে পৃথক দুই কমিটি

চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:০১ পূর্বাহ্ণ

বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখা এবং উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ না করে বিল করার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গতকাল কমিটি দুটি গঠন করে দেন চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ। সংস্থাটির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে গঠিত পৃথক দুটি কমিটিই তিন সদস্য বিশিষ্ট। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শাফকাত বিন আমিন ও হিসাব সহকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। গত রাতে চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ বিষয়টি দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন সিনেমা প্যালেস বাস কাউন্টারের বিপরীতে ৫ লাখ ২ হাজার ২২৩ টাকা এবং শহীদ মিনার মার্কেটের এক লাখ ২১ হাজার ২৫০ টাকা বিল বকেয়া ছিল। অথচ দোকান বরাদ্দ গ্রহীতারা বিলের টাকা পরিশোধ করেন।

এদিকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সংযোগ বন্ধ করে দেয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় চসিকের বিদ্যুৎ উপবিভাগের জোনটিতে বিল সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন রিদোয়ানুল হক চৌধুরী। তাকে একই বছরের ৮ জুন শোকজ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, একই বছরের ২২ এপ্রিল থেকে বিনা অনুমতিতে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে চসিকের একটি নোট শিটে বলা হয়, মার্কেটগুলোর হিসাব ও বিল আদায়ের রেজিস্ট্রার রিদোয়ানুল হকের নিকট রক্ষিত আছে।

এ ঘটনার দুই বছর পার হলেও দোকানদারদের পরিশোধকৃত বিলের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে চসিকের গত সাধারণ সভায় আলোচনা হয়। এর প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তে কমিটি করা হয়।

তদন্ত কমিটির জন্য নির্ধারিত কর্ম পরিধিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় বিদ্যুৎ বিল দোকানদারগণ কর্তৃক পরিশোধের রেজিস্ট্রার ও সংশ্লিষ্ট নথি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকর্মচারী হতে সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করে দোকান মালিকগণ কর্তৃক পরিশোধকৃত বিদ্যুৎ বিল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বরাবর পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা এবং এই বিষয়ে দায় দায়িত্ব নির্ধারণ করা।

উল্লেখ্য, ওই বিল সহকারী চসিকে পরবর্তীতে কবে যোগ দেন তার সুস্পষ্ট তথ্য জানা যায়নি। তবে ২০২২ সালের ১৪ মার্চ তাকে বিদ্যুৎ উপবিভাগের ৪ নং জোনের ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেটে বদলি করে অফিস আদেশ জারি করা হয়।

এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল বারী ভূইয়াঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত বছরের ২৬ ডিসম্বের মেয়র বরাবর একটি অভিযোগ দেন চকবাজারের আবুল কালাম আজাদ নামে এক ব্যক্তি। এর তিন মাস পর বিষয়টি নিয়ে গতকাল আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হল।

রেজাউল বারীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে বলা হয়, ৪ নং ওয়ার্ডস্থ বিভিন্ন কবরস্থানে আলোকায়ন কাজ না করে কাজের বিল প্রদান এবং বান্ডিল সেবক কলোনি নতুন বিল্ডিংয়ে বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এ বিভিন্ন সাইজের ক্যাবল স্থাপন না করে কাজের বিল প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে রেজাউল বারী আজাদীকে বলেন, যখন কাজ হয়েছে তখন আমি সেখানে কর্মরত ছিলাম না। দায়িত্ব নেয়ার পর যখন বিল উপস্থাপন করা হয় তখন ৩০ শতাংশ কাজ বাকি ছিল। সে কাজ আদায় করে নিয়েই বিল দেয়া হয়। তবে বিলের নথিতে অন্য কর্মকর্তাদেরও অনুমোদনের স্বাক্ষর আছে। তাই এককভাবে আমার নামে অভিযোগ করা উদ্দেশ্যমূলক হতে পারে। তাছাড়া ৪নং ওয়ার্ডে কাজ শেষ হওয়ার পর স্থানীয় কাউন্সিলর প্রত্যয়ন পত্র দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাইকারিতে কমছে চিনির দাম
পরবর্তী নিবন্ধজনপ্রতি সর্বোচ্চ ফিতরা ২৬৪০, সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা