বিএনপির সমাবেশ দেখে আ. লীগের কাতুকুতু লেগেছে : তথ্যমন্ত্রী

দিনের বেলায় বিদ্যুৎ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার

| মঙ্গলবার , ২৫ অক্টোবর, ২০২২ at ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির সমাবেশ দেখে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ভয় পাওয়া তো দূরের কথা আমাদের কাতুকুতু লেগেছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি কথা বলেন।
বিএনপির নেতারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ করে বলেছেন, তাদের সমাবেশে জনসমাগম দেখে সরকার ভয় পেয়েছে। একইসঙ্গে তারা হুমকি দিয়েছেন সময় আছে সরে যান, তা নাহলে পালানোর পথ পাবেন না এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশ করে বলেছেন যে তাদের সমাবেশ দেখে এই হয়েছে ওই হয়েছে। এমন লেগেছে তেমন লেগেছে অনেক কথা বলেছেন। তবে আমাদের কর্মীরা বলেছেন তাদের সমাবেশ দেখে আমাদের একটু কাতুকুতু লেগেছে। ভয় পাওয়া তো দূরের কথা কাতুকুতু লেগেছে। আসলে উনারা দুই হাজার লোকের সমাবেশ করেনতো। হঠাৎ ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ দেখে তারা একটু খেই হারিয়ে ফেলেছেন। তাই বক্তৃতা দিতে গিয়ে… ওই হচ্ছে ঘটনা। খবর বাংলানিউজ/বাসসের।
বিএনপির সমাবেশ নিয়ে খুলনায় জ্বালাও পোড়াও প্রতিবাদে শ্রমিক ও পরিবহন মালিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন, তা নাহলে সমাবেশ ঠেকানোর জন্য আওয়ামীলীগ আগে বিএনপিকে অনুসরণ করছে, এটা কী কোন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে বিএনপি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য আমরা সহযোগিতা করছি। পুলিশ খুলনায় প্রচণ্ড ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। পুলিশের ওপর বিএনপির লোকজন ইটপাটকেল মেরেছে। একইসঙ্গে আমাদের নেতাকর্মীরাও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। বিএনপি নির্ঝঞ্ঝাটভাবে সমাবেশ করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, দিনের বেলায় বিদ্যুৎ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেনি। তৌফিক-ই-ইলাহী সাহেব যেটি বলেছেন সেটি তার ব্যক্তিগত কথা এবং তিনিই তার ব্যাখ্যা দিতে পারবেন, সরকারের এ ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। ‘প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী প্রয়োজনে দিনের বেলায় বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন’ বলে সংবাদের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি এ কথা বলেন। খুলনায় বিএনপি’র শনিবারের সমাবেশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গত পরশুদিন বিএনপি খুলনায় সমাবেশ করতে গিয়ে খুলনায় নবনির্মিত রেল স্টেশনে ভাংচুর করেছে, দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। বিএনপি নেতারা বলেছেন যে, বাস-লঞ্চ এগুলো বন্ধ। বাস-লঞ্চের মালিকরা নিজেরাই ধর্মঘট ডেকেছে। এখানে সরকার কিংবা সরকারি দলের কোনো হাত নেই।’
তিনি বলেন, ২০১৩-১৪-১৫ সালে বিএনপি যেভাবে বাসে, লঞ্চে আগুন দিয়েছিল, জীবন্ত শ্রমিকদেরকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দিয়ে যেভাবে মানুষ হত্যা করেছিল, এ জন্য স্বাভাবিকভাবেই বাস এবং লঞ্চের মালিক ও শ্রমিকরা উদ্বিগ্ন ছিল এবং সেই সব ও অন্যান্য কারণে তারা ধর্মঘট ডেকেছিলেন।
এ সময় ড. হাছান তার ট্যাবে ২০১৩-১৪-১৫ সালের কিছু সংবাদচিত্র সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, দেখুন বিএনপির দেওয়া আগুনে বাস, লঞ্চ ও শ্রমিকরা কিভাবে পুড়ে মৃত্যুবরণ করেছে। বিএনপি’র এই অপরাজনীতির আগুনের কারণেই তারা ধর্মঘট ডেকেছে।
‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না’ বলে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়া বেশ ক’বার বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। ভাগ্যের এমন নির্মম পরিহাস, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রথমে ২৯টি আসন পেয়েছিল অর্থাৎ ৩০টির কম। পরবর্তীতে উপনির্বাচনের পর তাদের আসন সংখ্যা বেড়েছিল। আর আওয়ামী লীগ তখন তিন চতুর্থাংশ আসন পেয়ে সরকার গঠন করেছিল।’ আবার ২০১৮ সালে বিএনপি ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম সবাইকে নিয়ে, ড. কামাল হোসেনকে ‘হায়ার’ করে ঐক্য করে মাত্র ৫টি আসন পেয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার ৩০ আসনের বক্তব্য যেমন তাদের বেলায় ঘটেছিল, আমার আশঙ্কা, ফখরুল সাহেবের এই ১০ আসনের বক্তব্যও আবার তাদের বেলায় ঘটে কি না। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের সরকারের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দিচ্ছেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আসলে জাতীয় পার্টিকে তো নানা জনে ‘বি টিম’ বলে, তাই উনারা যে বিরোধী দল এটি দেখানোর জন্য তিনি কিছু কড়াকড়া বক্তব্য রাখছেন, এটি ভালো। আমি আশা করবো, জাতীয় পার্টির আভ্যন্তরীণ যে গন্ডগোলগুলো চলছে এগুলো তারা নিরসন করতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমাদের লড়াই গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার : ফখরুল
পরবর্তী নিবন্ধবিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপ, আশ্রয়কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দারা