বাড়ছে শীত, বাড়ছে পর্যটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বুধবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ at ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ

শীত বাড়ার সাথে সাথে পর্যটক বাড়ছে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দল বেঁধে সপরিবারে অথবা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন মিলে বেড়াতে আসছেন সাগরপাড়ে। বিশেষ করে সরকারি ছুটির দিনে পর্যটকদের ভিড়ে খালি থাকছে না শহর ও সাগরপাড়ের কোনো হোটেল কক্ষ। এমনকি গত সোমবার সরকারি কর্মদিবসেও কক্সবাজারে অর্ধলক্ষাধিক পর্যটক ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই কক্সবাজারে পর্যটকের আগমন বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে পর্যটকদের আনাগোনায় শহরের রাস্তাঘাট, বিপনিকেন্দ্র, সমুদ্র সৈকতসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসবমুখর পরিবেশ। হোটেল মালিকরা জানান, প্রতিবছর দুই ঈদ এবং থার্টিফার্স্টের ছুটিতে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এসময় হোটেল-মোটেলে শতভাগ রুম বুকিং থাকে। গত ঈদ ও থার্টি ফার্স্ট এর ছুটিতেও প্রত্যাশিত সংখ্যক পর্যটক এসেছেন কক্সবাজারে। সেসময় হোটেল-মোটেলে ছিল উপচে পড়া ভিড়। তবে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিবসে সেই ভিড় নেই বলে জানান বাংলাদেশ ট্যুরিজম সার্ভিসেস এসোসিয়েশন কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার।

তিনি জানান, কক্সবাজারের প্রায় ৫শ হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাত যাপনের সুবিধা রয়েছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পর্যটকদের চাপ বাড়ছে। গত শুক্রবার-শনিবার শহর ও সাগরপাড়ের প্রায় সব হোটেলেই শতভাগ কক্ষ ভাড়া হয়। আগামী শুক্র-শনিবারও (২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর) প্রায় শতভাগ কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বরও একই অবস্থা থাকবে। তবে ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিবসগুলোতে পর্যটকদের চাপ কিছুটা কম বলে জানান তিনি। তিনি জানান, সোমবার ছুটির দিন না হলেও কক্সবাজারের হোটেলগুলোর বেশির ভাগ কক্ষই ভাড়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ছুটির দিন ছাড়াও এখন গড়ে প্রতিদিন অর্ধলক্ষ পর্যটক ছিল কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।

কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ হোটেল-রিসোর্টস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে প্রায় শতভাগ কক্ষ বুকিং যাচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য দিনগুলোতেও ৫০% বেশি কক্ষ ভাড়া হচ্ছে। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জলপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় চলতি শীত মৌসুমে কক্সবাজারে তুলনামূলকভাবে পর্যটক কম বলে মনে করছেন কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনে প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান। তিনি মনে করেন, অন্য বছরের মতোই টেকনাফ থেকে স্বল্প খরচে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াতের সুযোগ থাকলে কক্সবাজারে পর্যটকের চাপ আরও বাড়ত। তবে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াতের সুযোগ সীমিত হওয়ায় শহরের পাশের দ্বীপ সোনাদিয়াতে এখন প্রচুর পর্যটক যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

সোনাদিয়ার ইউপি মেম্বার একরাম মিয়া বলেন, সম্প্রতি সোনাদিয়াতে স্থানীয় যুবকেরা ঝাঁউবাগানের ফাঁকে ফাঁকে তাঁবু বসিয়ে ইকোট্যুরিজম সুবিধা তৈরি করেছে। এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অত্যন্ত ভাল হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক সোনাদিয়া দ্বীপে রাত যাপন করছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআর বাড়ি ফেরা হলো না মোস্তাকের
পরবর্তী নিবন্ধবোরোর উৎপাদন বৃদ্ধিতে ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা