বাংলাদেশের লৌহ ও ইস্পাত শিল্প বিশ্ববাজার সৃষ্টি করছে

নগরীতে দুইদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক স্টিল কনফারেন্স শুরু

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের ৩২টি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নগরীতে শুরু হয়েছে দুইদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক স্টিল কনফারেন্স-২০২২। গতকাল সকালে নগরীর রেডিসন ব্লু বে ভিউতে কনফারেন্সের উদ্বোধন করা হয়। ভারতের স্টিলমিন্ট ও বাংলাদেশের আহমেদ এন্টারপ্রাইজ যৌথভাবে এ কনফারেন্সের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মহামারি কাটিয়ে বাংলাদেশের লৌহ ও ইস্পাত শিল্প বিশ্ববাজার সৃষ্টি করছে।
কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। উদ্বোধনী বক্তব্যে সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি হচ্ছে স্টিল। স্টিল ইন্ডাস্ট্রির কোয়ালিটি, ভ্যালু ক্রিয়েশন, বাজার সমপ্রসারণে সামিট ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। আমাদের সকলের উচিৎ এ শিল্পের উন্নয়নে কাজ করা। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, আমরা এখন গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা। আমাদের পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব নয়। উন্নয়নের ক্ষেত্রেও সবার পরামর্শে কাজ করতে হবে। সবার সহযোগিতা, ভাব বিনিময় ও কাজের আদান-প্রদানের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। একটি দেশের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভর করে, সেদেশে কী পরিমাণ স্টিল খরচ হয় তার উপর। কারণ যে কোন উন্নয়নমূলক কাজে স্টিল ব্যবহার হয়। এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪০০ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছে। আমাদের কী আছে কী দরকার, তাদের কী আছে কী দরকার তা এক টেবিলে বসে আলোচনা হবে। আমরা এখানে এক বছরের কাজ একদিনে করতে পারবো। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা অনেক উপকার পাবে।
কনফারেন্সে বিএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যন আলী হোসেন আকবর আলি অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে এখানে লোকজন এসেছে। আমাদের শিল্পখাতের জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই এখানে তাদের স্টল করেছে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নেওয়া আমাদের উচিত। ৭০ বছর ধরে বিএসআরএম গৌরবের সাথে ব্যবসা করছে। ধাপে ধাপে আমরা এই খাতে উন্নতি করেছি।
এ সামিটে বিশেষ সেশনে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা বিশ্বে অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহৃত লৌহ ও ইস্পাত পণ্যের বিশ্বব্যাপী বর্তমান পরিস্থিতি ও সম্ভাবনা, স্টিল কাঁচামালের ব্যয়বৃদ্ধি, সংকট ও সার্বিক অবস্থা, গুণগতমান, বর্তমান টেকসই প্রযুক্তি, জাহাজভাঙা শিল্প, আধুনিক মার্কেটিং পলিসি বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন। এছাড়া এ শিল্প নিয়ে বেশ কিছু মুল্যবান প্রবন্ধ-নিবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আমেরিকা, জার্মানি, বেলজিয়াম, ইতালি, ভিয়েতনাম, অষ্ট্রেলিয়া, ভারত, তাইওয়ান, চীন, জাপান ও বাংলাদেশসহ প্রায় ৩২ টি দেশের প্রতিনিধি সামিটে অংশ নিয়েছে। দেশের স্বনামধন্য শিল্প গোষ্ঠী পিএইচপি ফ্যামিলি, বিএসআরএম, কেওয়াই স্টিল, এস আলম, এইচ এম স্টিল, টিকে স্টিল, আনোয়ার ইস্পাত, সালাম স্টিল, জেডএসআরএমসহ দেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভারতীয় টাটা গ্রুপ, রাঘব প্রোডাক্ট, জাপানের মিটস্যুই, কোরিয়ার কোবে স্টিল, হুন্দাই স্টিল, বিশ্ববিখ্যাত জার্মানির এসএমএস গ্রুপ, ইলেকট্রোথাম, ইন্ডাকট্রোথামের মতো নামকরা বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো কনফারেন্সে যোগ দিয়েছে। দেশে গড়ে ওঠা শিল্পসমূহ কিভাবে উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন করতে পারে সে বিষয়েও বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন বিশেষজ্ঞগণ।
এতে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৪২টি স্টলে তাদের পণ্যের বিষদ বর্ণনা তুলে ধরেন। কনফারেন্সে বিএসবিআরএ ও স্টিলমিল অ্যাসোসিয়েশন সহযোগিতা করেছে। এসময় বাংলাদেশ শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তাহের, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক আলী হোসেন, আমীর হোসেন সোহেল, বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির আলী হোসেন, কেওয়াই স্টিলের সিইও জাবের হোসেন, স্টিল মিলগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ও প্ল্যান্ট প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। কনফারেন্সে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যানকে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হয়। একই সঙ্গে বিএসআরএম’র ৭০ বছর উদযাপন উপলক্ষে গ্রুপের চেয়ারমা্যানকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাফ জয়ী কন্যাদের বরণ ছাদ খোলা বাসে
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬