বাংলাদেশও গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে

আন্তর্জাতিক স্টিল কনফারেন্সের আলোচনা সভায় সারতাজ এম ইমরান

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

নগরীর পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে আন্তর্জাতিক স্টিল কনফারেন্সের সমাপনী দিনে গতকাল বুধবার গ্লোবাল শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ বিষয়ে আলোচনা সভা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু, এইচএম স্টিলের পরিচালক সরোয়ার আলম এবং সিমনি শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক সারতাজ এম ইমরান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোমিনুর রশিদ। সমাপনী বক্তব্য দেন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মো. মিজানুর রহমান।
আলোচনা সভায় সিমনি শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক সারতাজ এম ইমরান বলেন, পিএইচপি শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রিন শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড করেছে। আমরাও পিএইচপির মতো শিল্প মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় গ্রিন শিপ ইয়ার্ড তৈরি করব। বাংলাদেশও গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পিএইচপি গ্রিন শিপ ইয়ার্ড করার পরেও এখানে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো-গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের ক্ষেত্রে হংকং কনভেনশন অনুযায়ী শিপ রিসাইক্লিং কর্তৃপক্ষ শিপ কেনায় কিছু ইনসেনটিভ পাওয়ার কথা। কিন্তু পিএইচপি প্রথম দিকে সেই ইনসেনটিভ পেলেও এখন তা পাচ্ছে না। অর্থাৎ এখন অন্য সাধারণ শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের মতো দাম দিয়ে শিপ কিনতে হচ্ছে। তাহলে এত পরিমাণ টাকা খরচ করে লাভটা কি হলো? পিএইচপি বড় ইয়ার্ড তাই তাদের ১০০ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে। আর ছোট ও মাঝারি মানের কোম্পানিকে গ্রিন শিপ ইয়ার্ড করার জন্য ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হবে। এছাড়া গ্রিন শিপ ইয়ার্ড করার আরেকটা সুবিধা হলো-তারা গ্রিন শিপ ৯ম পৃষ্ঠার ৭ম কলাম
কিনে রিসাইক্লিং করতে পারবে। কিন্তু পিএইচপি এখন পর্যন্ত কোনো গ্রিন শিপ পায়নি। এছাড়া এখন বিশ্বব্যাপী শিপের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে মালিকরা পুরনো শিপ দিয়ে অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, আপনারা চিন্তা করে দেখুন আমাদের সবার গৃহস্থালীর ময়লা আবর্জনা সিটি কর্পোরেশন কিংবা পৌরসভার লোকজনকে পরিস্কার করার জন্য টাকা দিচ্ছি। এখন সিটি কর্পোরেশন কিংবা পৌরসভার সেগুলো রিসাইক্লিং করছে। কিন্তু আমরা বিদেশ থেকে ২৫-৩০ বছরের পুরনো শিপ কিনে আনছি, সেগুলো আবার পরিবেশগত এবং দুর্ঘটনাজনিত ঝুঁকি নিয়ে রিসাইক্লিং করছি। শিপের মালিক উল্টো আমাদের টাকা দেয়া দরকার। কারণ এসব শিপ যত পুরনো হবে ততই পরিবেশের ঝুঁকি বাড়ে। এক সময় ইউরোপ-আমেরিকাতে শিপ রিসাইক্লিং হতো। এখন তারা বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি শিপ রিসাইক্লিং হচ্ছে। আমাদের আরেকটি প্রস্তাবনা হলো-যেসব জাহাজ এখন অপারেশন চালাচ্ছে, তাদের মালিকগণ পরিবহন ভাড়ার নূন্যতম কিছু টাকা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কাছে জমা রাখবে। সেই টাকা শিপের আয়ুস্কাল ফুরিয়ে গেলে রিসাইক্লিং প্রতিষ্ঠানকে দিবে। কারণ আমরা বিশাল একটা আবর্জনা পরিস্কার করছি। এই শিপ যদি বছরের পর বছর পানিতে পড়ে থাকে, তাহলে এটি সমুদ্রের জীব বৈচিত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কারণ শিপের জং এবং পরিত্যক্ত তেল পানিতে মিশবে। এছাড়া শিপ সমুদ্রের পানিতে ভাসার কারণে জায়গা দখল হবে এবং জাহাজ চলাচল বিঘ্ন ঘটবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএমএ মান্নান সবসময় জনতার মান্নান ছিলেন
পরবর্তী নিবন্ধপাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর বিএনপিকে প্রতিহত করার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর