এমএ মান্নান সবসময় জনতার মান্নান ছিলেন

স্মরণসভায় হুইপ স্বপন ।। ‘বিলবোর্ডে ব্যক্তিবন্দনা নির্ভর কদর্য রাজনীতি চাই না’

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

মুক্তিযুদ্ধকালীন বিএলএফ’র পূর্বাঞ্চলীয় অধিনায়ক, সাবেক মন্ত্রী এম.এ মান্নানের স্মরণসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেছেন, জ্যোতির্ময় নেতা এমএ মান্নান সব সময় জনতার মান্নান ছিলেন। রাজনীতিকে তিনি জনকল্যাণমুখী ধারায় প্রবহমান রেখেছিলেন বলেই তিনি সকলের অন্তর ছুঁয়েছেন। জননেতা এম.এ মান্নান অজাতশত্রু শুদ্ধাচারী রাজনীতিক এবং জ্ঞানতাপস। চট্টগ্রামের এম.এ মান্নান অবশ্যই একজন জাতীয় নেতা।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সম্পর্কে আমাদের কাছে অন্যরকম ভালোবাসা আছে। আমি শৈশব থেকেই এম.এ মান্নানকে জেনেছি। চট্টগ্রামের কিংবদন্তি রাজনীতিক এম.এ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, এম.এ হান্নান, এ.বি.এম. মহিউদ্দীন চৌধুরীর কীর্তীর কথা সমগ্র দেশবাসী জানে এবং তারা চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। গতকল বুধবার সকালে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম.এ মান্নানের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এম.এ মান্নানের মত রাজনীতিকের সংখ্যা কমে আসছে। রাজনীতিতে দলের আদর্শের প্রতি আনুগত্য ও জনগণের সেবা ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠাই একজন রাজনীতিকের ব্রত। কিন্তু আজকে রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আজকে আমাদের কাছে অনেক সময় দলের চেয়ে নেতা বড় হয়ে যায়। রাজনীতিতে ব্যক্তির প্রচার ও বন্দনা বেড়ে গেছে। রাজনীতি আবর্জনার জায়গা নয়। ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার নির্ভর নয়। আজকে দেখা যায়, বিলবোর্ডে ব্যক্তিবন্দনা এবং বিলবোর্ড নির্ভর এই কদর্য রাজনীতি ৯ম পৃষ্ঠার ৭ম কলাম
চাই না। এখনো আমরা সবাই নিজে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত আছি। আমরা কি নিজেদের হৃদয়ের আয়নায় নিজেদের দেখি-আমরা ভোট বাড়ায় নাকি কমায়! এখনো সময় আছে সবাইকে আত্মশুদ্ধি হওয়ায় আহ্বান জানাই।
তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, করোনা মহামারিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করে জাতিকে স্বস্তি দিয়েছেন, অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন। সাধারণ মানুষের নিত্য জীবনধারা যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অভিযাত্রায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি-জামাত মাঠ দখলের মহড়া দিচ্ছে, এটা অশুভ ইঙ্গিত। কোনো অপশক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সংঘাত নয় সহনশীলতার চর্চা করি। তার মানে এই নয় যে, অযৌক্তিক দাবি দাওয়ার নামে নাশকতা ও অপরাজনীতিকে জনগণ অনুমোদন দেবে। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, প্রয়াত জননেতা এম.এ. মান্নান অর্থ-বিত্তের জন্য রাজনীতি করেননি। বরং রাজনীতির জন্য অর্থবিত্ত বিসর্জন দিয়েছেন। খুব সাদামাটা জীবন যাপন করে দলের আদর্শিক চেতনায় সাংগঠনিক ভিত্তিকে মজবুত করে গেছেন। তিনি আমাদের রাজনৈতিক শিক্ষক এবং সৃজনশীল রাজনৈতিক কর্মী সৃষ্টির কারিগর।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, জননেতা এম.এ. মান্নান আপাদমস্তক শুদ্ধাচারী রাজনীতিক। আমৃত্যু তিনি আদর্শকে ধারণ করেছেন। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী এবং নম্র, ভদ্র ছিলেন। তাকে কখনো রাগান্বিত হতে দেখিনি। কেউ যদি তাকে কষ্ট দিতেন কিন্তু তার অভিব্যক্তিতে এর প্রকাশ ছিল না। তার মধ্যে কখনো আমিত্ব ছিল না। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হচ্ছি। আমাদেরকে জনগণের কাছে গিয়ে সাংগঠনিক ভিত্তিকে মজবুত করতে হবে এবং আমাদের ঐক্যের শক্তিকে সুসঙ্গত করতে হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, একজন পরিশুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক বলতে যাকে বুঝায় তিনি হলেন এম.এ. মান্নান। কোনো অহংকার ও দর্প তাকে স্পর্শ করে নি। একজন কর্মী হিসেবে তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, এ.টি.এম. পেয়ারুল ইসলাম, বদিউল আলম, শফিক আদনান, জেলা পি.পি. এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, মরহুম এম.এ মান্নানের সন্তান আব্দুল লতিফ টিপু, মো. জাবেদ, চসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম, ফিরোজ আহমেদ, মহানগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. দিদারুল আলম প্রমুখ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, শেখ আতাউর রহমান, এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, আবুল কাশেম চিশতী, আবদুচ ছালাম, সফর আলী, শেখ মো. ইসহাক, নোমান আল মাহমুদ, হাসান মাহমুদ শমসের প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুরু হচ্ছে চতুর্থ কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশও গ্রিন শিপ ইয়ার্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে