বজ্রপাতের মৃত্যু, প্রয়োজন সচেতনতা

মাহমুদুল হক হাসান | শুক্রবার , ২২ জুলাই, ২০২২ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা নতুন কোনো বিষয় নয়। গত কয়েক বছরে বজ্রপাতের পরিমাণ ও প্রাণনাশের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ ও আবহাওয়াবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার ধরণ পরিবর্তন, বায়ু দূষণ, উঁচু বৃক্ষ হ্রাস, আকাশে কালো মেঘের ঘর্ষণ এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ইত্যাদি বজ্রপাত বৃদ্ধির কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা অনুযায়ী প্রতিবছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত (৮০ থেকে ১২০ দিনে) বাংলাদেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৪০টি বজ্রপাত হয়। বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে।

পরিবেশবাদী সংগঠন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর এক জরিপে বলা হয়েছে, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গত ১১ বছরে দেশে বজ্রপাতে ২৮৮০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ২০২১ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাসে দেশে বজ্রপাতে ১৭৭ জনের প্রাণনাশের ঘটনা ঘটেছে। বজ্রপাতে যারা নিহত হয়েছে তাদের অধিকাংশই খেটে খাওয়া সাধারণ চাষী বা মাঠকর্মী।

বিশেষজ্ঞদের মতে বজ্রপাতের ভয়াল থাবা থেকে এসব সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষকে বাঁচাতে বেশি করে উঁচু বৃক্ষ রোপন করতে হবে। গ্রাম ও শহরের আবাসিক এলাকাগুলোতে ৪০ মিটার বা তার কাছাকাছি উচ্চতার তাল, নারিকেল, সুপারি, বাবলা, হিজল ও বটের মত গাছ অধিক হারে রোপন করতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক দেশের হাওর অঞ্চল সহ ২৩ টি জেলায় লাইটার এরেস্টার সংবলিত বজ্রপাত নিরোধক কংক্রিটের শেল্টার নির্মাণে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বজ্রপাত একটি আকস্মিক ঘটনা। যা দমন বা নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজীবনের ঝুঁকি কমাতে গাড়ির গতি কমাতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধকৃতজ্ঞতাবোধ অনেক বড় একটি গুণ