সনটা ১৯৭০। স্থান : শাহজাহান হোটেল। সদরঘাট, চট্টগ্রাম।
এক মোহনীয় স্নিগ্ধ সকাল। কোন এক মন মাতাল করা
সুর উদ্ভ্রান্ত হাওয়ায় টেনে টেনে এখানে এনেছে আমায়।
আগেই জেনেছি বঙ্গবন্ধু আসবেন এখানে। কিছুক্ষণ
পর আসমান আলো করে কবুতরের মতোন প্রশান্ত
ডানা বিস্তার করে দাঁড়ালেন আমার সামনে এক প্রান্তরের
শালপ্রাংশুদেহ। বিশাল বুকের প্রান্ত সবুজের মতো
শান্ত উদার। দু’হাত প্রসারিত আমার সামনে। আমি
কিংকর্তব্যবিমূঢ়! কবিতার মতো পরম মমতায়
আমার দু’খানা ছোট্টো হাত তাঁর বিশাল হাতের
মুঠোয়। অবিশ্বাস্য এক কৌতুহল আমাকে গিলে
খাচ্ছে। অসংখ্য মুজিব ভক্ত হোটেল প্রাঙ্গণ জুড়ে
কোলাহলমুখর। অসত্য আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার
চক্রব্যুহ ছিন্ন করে তিনি এখন মুক্ত মানব।
বাঙালি জাতির অকুতোভয় মহানায়ক। লক্ষ
লক্ষ জনতার স্বতোঃ উৎসারিত উপাধিপ্রাপ্ত ‘বঙ্গবন্ধু’।
সকাল গড়িয়ে দুপুর। আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত
বঙ্গবন্ধুর অবয়ব। ফুলে ফুলে সুশোভিত তাঁর
সমস্ত দেহ। কী অপূর্ব মনোহর মূর্তি। সফেদ
পাঞ্জাবি, তাঁর ঐতিহ্যের স্মারক কালোবর্ণের
মুজিবকোট। অভাবিত মোহময় লাখো মানুষের
হৃদয় হরণ করা এদৃশ্য কখনও কী ভোলা যায়?