সন্দ্বীপ-চট্টগ্রাম নৌ-রুটে ফেরি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বছরখানেক ধরে সন্দ্বীপ আসছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সন্দ্বীপে ফেরি চালুর তোড়জোড় আরও বেড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি সন্দ্বীপে এসেছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এসএম ফেরদৌস আলম, বিআইডব্লিওটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিওটিসির চেয়ারম্যান শামীম আল রাজীসহ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। এ সময় সন্দ্বীপে দ্রুত ফেরি সার্ভিস চালু করা নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তারা।
বিআইডব্লিওটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক জানান, সন্দ্বীপের এমপি মাহফুজুর রহমান মিতা বারবার এ ফেরি সার্ভিস নিয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে গেছেন, সংসদীয় কমিটির কাছে উত্থাপন করেছেন, সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিও লেটার দিয়েছেন সন্দ্বীপের যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব সন্দ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের। সে কারণে বিআইডব্লিওটিএ ও বিআইডব্লিওটিসি দ্রুত সন্দ্বীপে ফেরি চলাচলের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, কুমিরা থেকে গুপ্তছড়া নৌ-পথের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। সেজন্য আমরা সন্দ্বীপের আরো উত্তরে চেষ্টা করছি যেখানে সাগরে দূরত্ব কম। একটা উচ্চ পর্যায়ের কমিটি যাচাই-বাচাই করে দেখেছে গাছুয়া থেকে বাকখালীর (সীতাকুণ্ড) দূরত্ব কম, সাগরও কিছুটা কম উত্তাল থাকে এদিকে। এছাড়া সংযোগ রাস্তাটা সম্পন্ন করাও সহজ হবে। এজন্য তুলনামূলকভাবে গাছুয়া বাকখালী নৌ-রুট ফেরিসার্ভিস চালুর জন্য অগ্রাধিকার পাবে। তিনি বলেন, এ বছরের শেষে যদি কাজ শুরু করতে পারি তাহলে আগামী শুষ্ক মৌসুমে ফেরি সার্ভিস চালু করা যাবে।
বিআইডব্লিওটিসির চেয়ারম্যান শামীম আল রাজী জানান, সন্দ্বীপের জন্য ফেরি চালু করতে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে। কোন জায়গা দিয়ে ভার্টিক্যাল দূরত কম হবে সেস্থান দিয়ে আমরা ফেরি সার্ভিস চালু করবো। কোন জায়গা দিয়ে মানুষের সহজ হবে তা নির্ধারণে কাজ করা হচ্ছে। যে জায়গা দিয়ে সবচেয়ে ফিজিবল হবে সে জায়গা দিয়ে ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে। আমরা সন্দ্বীপবাসীকে সুখবর দিতে চাই। তবে দুই পাড়ে ভাটার সময় বেড়িবাঁধ থেকে দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার করে চার কিলোমিটার। ফেরির মূল জেটির সাথে বেড়িবাঁধ থেকে এ দূরত্বে নির্মাণ করতে হবে টেকসই রাস্তা ও ব্রিজ। কিন্তু ফেরি চলাচলের এসব অবকাঠামো নির্মাণের কাজ এখনো দৃশ্যমান হয়নি। তাই কবে নাগাদ সন্দ্বীপের সাথে চট্টগ্রামের ফেরি চলাচল শুরু হবে তা নিয়ে আঁধারেই আছেন নিয়মিত দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়ে সন্দ্বীপ চ্যানেল পার হওয়া সাধারণ মানুষ।