ফেদেরিকো গারসিয়া লোরকা : অন্যতম স্প্যানিশ কবি

| শুক্রবার , ১৯ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ

ফেদেরিকো গারসিয়া লোরকা। আধুনিক স্প্যানিশ সাহিত্যের অন্যতম কবি। তিনি একাধারে একজন কবি, নাট্যকার ও মঞ্চ পরিচালক ছিলেন। তাকে স্পেনে ’জনগণের কবি’ বলে ডাকা হয়। তাঁর বেশ কটি গ্রন্থ ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। লোরকা ১৮৯৯ সালের ৫ জুন স্পেনের আন্দালুসিয়া জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন জমিদার আর মা ছিলেন স্কুল শিক্ষক, মূলত পিয়ানো বাজানো শেখাতেন। ছোটবেলায় অসুস্থতার কারণে পড়াশোনায় কিছুটা অনিয়মিত হয়ে পড়েন লোরকা। স্কুল শিক্ষা সমাপ্তির পর ১৯১৫ সালে লোরকা গ্রানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন আইন ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। গ্রাডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক বড়ান দন ফের্নান্দো দে লোস রিয়োস’র উৎসাহে তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। সে সময় তিনি লিখেন ভ্রমণবৃত্তান্ত ইমপ্রেসিয়োনেস ই পাইসাহেস বা মানচিত্র ও ভূদৃশ্যাবলি। এটিই তার প্রথম প্রকাশিত বই (১৯১৮)। ১৯১৯ সালে লোরকা মাদ্রিদে চলে যান। সেখানে তিনি মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও দর্শন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই হাঁপিয়ে ওঠেন। পাঠ্যক্রমভুক্ত বিধিবদ্ধ পাঠে তার আর মন বসে না। এরপর তিনি শিল্পচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। মগ্ন থাকেন অভিনয়, কবিতাপাঠ ও প্রাচীন লোকগীতি সংগ্রহে। এ সময় এল ‘মালেফিসিয়ো দে লা মারিপোসা’ নামে একটি নাটক লিখে। ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয় তার কানসিয়োনেস বা গীতিমালা। ১৯২৮ সালে আলোর মুখ দেখে রোমান্সেরো হিতানো বা জিপসি গাথা। এ বই তাকে খ্যাতির তুঙ্গে নিয়ে যায়। কবিতার পাশাপাশি চলে তার নাট্যচর্চা। তার দ্বিতীয় নাটক মারিয়ানা পিনেদা ১৯২৭ সালে বার্সেলোনায় মঞ্চস্থ হলে বিপুল প্রশংসা কুড়ায়। পরের নাটক লা সাপাতেরা প্রোদিহিয়োসা বা মুচির আশ্চর্য বিবি একটি প্রহসন। ১৯৩০ সালে সেকেন্ড স্প্যানিশ রিপাবলিক ঘোষিত হলে লোরকা দেশে ফিরে আসেন। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে নাট্যবিষয়ক সংস্থা ‘বাররাকা’র পরিচালক পদে নিয়োগ দেন, যার কাজ সাধারণ জনগণের জন্য নাটক প্রণয়ন ও প্রদর্শন। তিনি গ্রামেগঞ্জে গিয়ে বিনামূল্যে নাটক দেখাতে থাকেন। নিজে নাটক পরিচালনা করেন এবং তাতে অভিনয় করেন। ১৯৩৬ সালে স্পেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। লোরকা তখন তার নিজগৃহ ‘কায়েহোনেস দে গারসিয়া’তে অবস্থান করছিলেন। ফ্রাঙ্কোর সৈন্যরা তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং বন্দী করে রাখে। ১৯ আগস্ট ঘাতকেরা তাকে কবরস্থানে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। তার লাশ গুম করে ফেলা হয়। তার মৃতদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধআব্দুল করিম রোডের বিবিধ সমস্যা