ফুটবল টুর্নামেন্টের ট্রফি ভাঙলেন ইউএনও

আলীকদমে প্রতিবাদ সমাবেশ

লামা ও বান্দরবান প্রতিনিধি | রবিবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

আলীকদমে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের মধ্যে ট্রফি বিতরণ না করে খোলোয়াড় এবং দর্শকদের সামনে ভেঙে ফেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুবা ইসলাম। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ২ নম্বর চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের রেপারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ফাইনাল খেলা শেষে বক্তব্য দেয়ার এক পর্যায়ে ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে টেবিলে আছড়িয়ে ট্রফি দুটি ভাঙেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ক্রীড়ামোদিসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার বিশেষ অতিথি ও আলীকদম উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. কফিল উদ্দিন জানান, স্থানীয় স্বাধীন যুব সমাজের উদ্যোগে উপজেলার ২ নম্বর চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের রেপার পাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাসব্যাপী আন্তঃইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার ছিল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা। আবাসিক জুনিয়র একাদশ বনাম রেপার পাড়া বাজার একাদশের মধ্যকার অনুষ্ঠিত খেলা নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে ড্র হয়। টাইব্রেকারের মাধ্যমে আবাসিক জুনিয়র একাদশ ৩-১ গোলে রেপার পাড়া বাজার একাদশকে হারায়।
খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের এক পর্যায়ে ইউএনও উপস্থিত দর্শকদের বলেন, খেলায় হার-জিত থাকবে, এতে কারো মন খারাপের কারণ নেই। এ জয়-পরাজয়ের কথা আমাদের কত দিন মনে থাকবে? এসময় দর্শকদের কয়েকজন বলেন, যতদিন ট্রফি থাকবে, এই ট্রফি দেখব, ততদিন মনে থাকবে। দর্শকদের এমন মন্তব্যের সাথে সাথেই ইউএনও মেহরুবা ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে উপস্থিত খেলোয়াড় ও দর্শকদের সামনে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ট্রফি দুটি টেবিলে আছড়িয়ে ভেঙে ফেলেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, এ ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। অতীতে কখনো আলীকদমে এমন ঘটনা ঘটেনি, দেশের কোথাও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।
বিষয়টি স্বীকার করে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুবা ইসলাম বলেন, খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণের সময় হঠাৎ শোরগোল উঠে- তিন গোল, চার গোল তারা মানে না। তখন আমি বললাম, খেলা আবার হবে কিনা? তখন এটা নিয়ে পেছন থেকে খুব আওয়াজ শুরু হলো তারা ট্রফি নেবে না। তারাই বলল, ট্রফি যতদিন থাকবে একটা আক্রোশ থাকবে। ট্রফি ভেঙে ফেলা হোক। সেই মত ট্রফি ভেঙে ফেলা হল। পরে আমি বললাম, তাহলে ঠিক আছে আপনারা মেডেলগুলো নিয়ে যান। তারা সেগুলোও নেননি। ওখানে বহিরাগত কিছু ছেলে এসেছিল।
এ ঘটনায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ইউএনও এটি করতে পারেন না। তিনি ট্রফিগুলো রেখে দিয়ে পরবর্তীতে দিতে পারতেন।
এদিকে গতকাল শনিবার বিকালে আলীকদমে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম ইউএনওকে আলীকদম থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। অপরদিকে, টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটি স্বাধীন যুব সমাজের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ট্রফি ভাঙার বিষয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে ধর্ষণসহ ১০ মামলার আসামি দেলোয়ার গ্রেপ্তার