ফারাজ সিনেমা ‘ভুল গল্পে’, মুক্তিতে আপত্তি অবিন্তার মায়ের

| শুক্রবার , ২০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা নিয়ে বলিউডে ফারাজ নামে যে সিনেমাটি তৈরি হয়েছে, তা ভুল গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত বলে দাবি করেছেন সেদিন নিহত অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ। ফারাজ’র ট্রেইলার প্রকাশের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে এসে এই দাবি করার পাশাপাশি সিনেমাটি মুক্তি না দেওয়ার আহ্‌বান জানান তিনি। সিনেমাটির নির্মাতারা সেই ঘটনায় নিহত হিসেবে অবিন্তার পরিবারের কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি বলে রুবার অভিযোগ। ভারতে সিনেমাটির মুক্তি বন্ধ করতে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন জানিয়ে দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমাটি মুক্তি না দেওয়ার আহ্‌বান জানান তিনি।

ঢাকার শাহজাদপুরে অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। ঘণ্টাব্যাপী এই সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় মেয়ের স্মৃতি স্মরণ করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন রুবা।

২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় যে ২২ জন নিহত হয়েছিলেন, তাদের একজন অবিন্তা। যুক্তরাষ্ট্রের এমোরি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অবিন্তা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার স্বদেশী সহপাঠি ফারাজ আইয়াজ হোসেন এবং তাদের ভারতীয় বন্ধু তারিশি জৈনের সঙ্গে ক্যাফেটিতে গিয়েছিলেন। কমান্ডো অভিযানে রেস্তোরাঁটি জঙ্গিমুক্ত করার পর তাদের লাশ পাওয়া যায়। ঝড় তোলা সেই ঘটনা নিয়ে বলিউডে ‘ফারাজ’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন হানসাল মেহতা, টি সিরিজের ব্যানারে। গত সোমবার সিনেমা ট্রেইলার প্রকাশ হয়েছে, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তির তারিখও ঠিক হয়েছে। পুরো সিনেমাটি না দেখলেও নাম ও ট্রেইলার দেখে এখানে ফারাজকে মূল চরিত্র হিসেবে দেখানো হচ্ছে বলে ধারণা হয়েছে অবিন্তার মা রুবার। খবর বিডিনিউজের।

সেখানে ভুল হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, যে ঘটনাটিকে বলা হয়েছে যে আমার মেয়ের জন্য একজন মানুষ (ফারাজ) তার জীবন দিয়েছেন, সেই হিরোনো, দ্যাটস রং। ইটস অ্যা রং স্টেইটমেন্ট। এটা হতে পারে না। এই মুভিটা রং। আমি তা বিশ্বাস করি না। কারণ তার কোনো প্রমাণ নেই। ওখান থেকে কেউ বেঁচে আসেনি। যারা বেঁচে এসছে, তারা এ বিষয়ে কিচ্ছু জানে না, বলতে পারে না। এ বিষয়ে কোন এভিডেন্সও নাই যে এখানে কেউ হিরো হয়েছে। যদি কেউ হিরো হয়ে থাকে, তাহলে সেই ২২টা মানুষ, যারা চলে গেছে, তারা সবাই হিরো।

সিনেমা নিয়ে আপত্তির বিষয়গুলো স্পষ্ট করে তিনি বলেন, আমার কয়েকটা পয়েন্ট ছিল। এক হচ্ছে: অবিন্তা কবির, তারিশি জৈন, ফারাজ হোসেন এই তিনজন বাকি ২২ জনের মতো চলে গেছে। এটাকে নিয়ে কোনো মুভি করার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। মুভিটার নাম ‘ফারাজ’, তার মানে হলো অবশ্যই একটা চরিত্রের উপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই ক্যারেক্টারের উপর জোর দিতে গিয়ে আমার মেয়ের কথা চলে আসছে। সো আমরা একটা গল্প বানালাম, সেই গল্প বানিয়ে মুভিটা তৈরি করলাম। কিন্তু এই মুভির সাথে যে পরিবারগুলো আছে, তাদের তো অনুমতি নিতে হবে, সেটা তো নেওয়া হল না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিকআপের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটর সাইকেল আরোহীর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে ট্রাক-বাইক সংঘর্ষ যুবক নিহত