প্রিয় আলীশাহ্‌ ভাইয়াকে স্মরণ

সৈয়দা সেলিমা আক্তার | শনিবার , ৩১ মে, ২০২৫ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

মে মাসের শেষ দিনটিতে তোমার জন্ম। সেদিন ছিলো শুক্রবার।বাবা মায়ের প্রথম সন্তান তুমি। পড়াশোনা, লেখালেখি সবকিছুতে এগিয়ে ছিলে। ছিলে ভালো সংগঠকও। মুকুল মেলা, অঙ্গন থিয়েটারের প্রাণবন্ত একজন। ছোটোবেলায় খেয়াল করেছি তুমি রাতজেগে পড়াশোনা করতে। কারো ঘুমে ব্যাঘাত না হওয়ার জন্য ল্যাম্পে শেড দেওয়া (হারিকেনে) থাকতো। বাতিকটা বদরুন সহ অনান্যদেরও ছিলো। লন্ড্রির কাপড়ের সাথে তখন নিউজ পেপার দিতো সেগুলো জমা করে তৈরি করতে লেখার খসড়া। আমাদের নামাজ ও আমপারা শিক্ষা দিয়েছিলে। একসঙ্গে বেড়াতে নিতে ছোটছোট ভাইবোনদের। বই কিনে দিতে। আর ছিলে বন্ধু বৎসল যেখানে যেতে বন্ধুদের দেখলে সঙ্গে নিতে। রাজশাহীর আমঝুঁপি থেকে একটা চিঠিতে লিখেছিলেমনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করতে। তোমার বন্ধুরা এলে যথাযথ আপ্যায়ন করতে। মনে পড়ে কথাগুলো। জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছাউপহার নিতে না। বলতে যেদিন জন্মদিন সেদিন দিও। আর আমার প্রথম লেখাটাতো তুমি ছেপেছিলে কিন্ডারগার্ডেনে থ্রিতে পড়ুয়া ছোটবোনটির ছড়া ময়ূখে ছেপেছিলে। সে কি ভোলা যায়! শাদা লিলি দিয়েছিলাম বলে লিখে দিয়েছিলে কবিতাএপিটাফমুহাম্মদ আলীশাহবোন অধমেরে দিলি ফুল/ করিসনে এই ভুল/ যাই থাক লেখা/এপিটাফের পাশে/ ভরে থাকে যেনো সুবাসে/ লোবানে আতরে মাখা। আজ তোমার জন্মদিনে তোমার নামে সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন অধ্যাপক এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা। এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরার জন্ম চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার উত্তর মাদার্শা গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পরিবার পণ্ডিতবাড়িতে। মাতা জরিনা হক এবং পিতা চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব অতিরিক্ত জেলা জজ মুফিজুল হক। জীবনসঙ্গী মুজিবুর রহমান একজন শিল্পপতি ও সমাজব্রতী। তাঁরা ছিলেন তাঁর জীবনের অনুপ্রেরণার উৎস। মহিলা কলেজ চট্টগ্রামের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরার অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আমার শিক্ষক। আমাদের রাদিয়া প্রকাশন থেকে তাঁর বেশ কয়েকটি বইও প্রকাশিত হয়েছে।এবারে প্রকাশিত হলো শৈলী প্রকাশন থেকে ছোটোদের গল্পগ্রন্থ ‘ফুলের রঙে আঁকা’। এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা বহু সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত। লেখালেখি ও সমাজসেবার জন্য তিনি অর্জন করেছেন মানুষের ভালোবাসা ও বহু পুরস্কার। বই পড়া, গান শোনা ও ভ্রমণ করা তাঁর শখ। এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে: আলোকের ঝরনাধারা (কিশোর উপন্যাস)। উপন্যাস : রৌদ্রদহন। নির্বাচিত কলাম : আমার দেশ আমার শহর । স্মৃতিকথা : কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন (প্রথম খণ্ড), কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন (দ্বিতীয় খণ্ড), কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন (তৃতীয় খণ্ড) এটি তিনি আমাকে আর টিটুকে উৎসর্গ করেন। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। ভ্রমণ কাহিনী : সুদূরের পথে। রাদিয়া প্রকাশন ও মুহাম্মদ আলীশাহ্‌ গ্রন্থাগারের পক্ষ থেকে এলিজাবেথ আপাকে এ পুরস্কার দিতে পেরে আমরা ধন্য। আবারো শুভেচ্ছা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমধুমাসের আয়েশি রঙ
পরবর্তী নিবন্ধসকলের প্রিয় মিন্টু ভাই