প্রসঙ্গ : বন্যহাতির আক্রমণ ও তাদের রক্ষা

| সোমবার , ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ইদানীংকালে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণহানি বাড়ছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড় ছেড়ে লোকালয়ে বন্য হাতির বিচরণে জনমনে আতংক বয়ে বেড়াচ্ছে ।তবে বন্য হাতির লোকালয়ে চলে আসা ও আক্রমণের কারণ নানাবিধ। মূলত বন্য হাতির আক্রমণের জন্য মানুষই বিশেষ ভাবে দায়ী। ক্রমাগত বন- জঙ্গল নিধন, পাহাড় কেটে বসতি নির্মাণ,পাহাড়ে ক্রমশ গাছপালা কর্তন সহ নানান কারণে হাতির খাদ্যের ব্যাপক অভাব দেখা দিয়েছে। তাই তারা পাহাড় থেকে পাকা ধান কিংবা তাদের খাবার দেখলেই ছুটে আসছে।তাছাড়া হাতির বাসযোগ্য আবাসস্থল সংকট ও চলাচলের জায়গা দিন দিন সংকুচিত হওয়ার ফলে হাতি বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসছে। বেশিরভাগ পাহাড় ও বনাঞ্চলে হাতির বাসযোগ্য পরিবেশ এখন নেই বললেই চলে।এসব কারণেই হাতি পাহাড় থেকে লোকালয়ে ঢুকে ঘরবাড়ি-ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করছে,এছাড়া মানুষের ওপরও আক্রমণ বেড়েছে। তাছাড়া মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ায় হাতি সেখানেও প্রবেশ করতে পারছে না, ফলে বাঁচার তাগিদে পাহাড়ি বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এসব বন্য হাতির দল। আক্রমণাত্মক এসব হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতো মানুষ হাতিকে ফাঁদে ফেলে হত্যা করছে, এভাবে পার্বত্যাঞ্চল থেকে কমতে শুরু করেছে বন্য হাতি। হাতির আক্রমণে মৃত্যুর জন্য মানুষেরও অসচেতনতার কমতি নেই, লোকালয়ে হাতি দেখলেই নানান শব্দ করা, হাতিকে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা, বিভিন্নভাবে ডিস্টার্ব করা ইত্যাদি কারণেও হাতি মানুষের উপর আক্রমণ করে বসে এবং ঘটে প্রাণহানির ঘটনা। পাহাড়ে মানুষের অত্যাচারের ফলে বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফলে বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণী। এছাড়া দেশের জীববৈচিত্র্য এখন ধ্বংসের পথে। শুধু তাই নয়,এসব কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশ এখন চরম বিপর্যয়ের মুখে। তাই লোকালয়ে বন্য হাতির বিচরণ ও মানুষের উপর আক্রমণ ঠেকাতে পাহাড়ে হাতির বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং খাদ্য চাহিদা মেটাতে প্রচুর পরিমাণে গাছপালা লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি বন্য হাতি রক্ষায় বন বিভাগ কর্তৃক সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে।
আরিফুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর কলেজ

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধশাহ আবদুল করিম : মাটির শিল্পী, গণমানুষের শিল্পী