প্রধানমন্ত্রী আসছেন, তাই ‘সুনজর’

পতেঙ্গা-বারিক বিল্ডিং সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে আজ ব্যয় হবে ১৫ কোটি টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

নগরীর বেহাল হয়ে যাওয়া প্রধান সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পতেঙ্গা থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ের ১২ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে আজ। এ জন্য সিডিএর অন্তত ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর থেকে পলোগ্রাউন্ড ময়দান পর্যন্ত রাস্তাটি যান চলাচলের উপযুক্ত করে তোলার জন্য রাতে দিনে কাজ চালানো হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী আসার এক মাস আগে রাস্তাটি করা হলেও এটি ততদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, নগরীর যান চলাচলে গতিশীলতাসহ নানামুখী লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে নগরীতে সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। ৪ হাজার ২শ’ ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে লালখান বাজার-পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। পতেঙ্গা থেকে আসা এক্সপ্রেসওয়েকে লালখান বাজারে ইতোপূর্বে নির্মিত আক্তারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত করে দেয়া মূলত বহদ্দারহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ একটি ফ্লাইওভার তৈরি হচ্ছে। যা চট্টগ্রামের যান চলাচলের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক এক গতিশীলতা তৈরি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদনের পর প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। পুরো প্রকল্পটিকে পাঁচটি পৃথক ধাপে ভাগ করে নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
সড়কের উপর ফ্লাইওভার নির্মাণ করতে গিয়ে নগরীর পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে উঠে। বিশেষ করে পতেঙ্গা থেকে কাঠগড়, সিমেন্ট ক্রসিং, ইপিজেড, সল্টগোলা ক্রসিং এবং বারিক বিল্ডিং এলাকায় সড়কের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠে। পতেঙ্গা থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকার বহু স্থানে রাস্তার পাশে ড্রেন না থাকার কারণে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়। রাস্তা জুড়ে তৈরি হয় হাজার হাজার খানাখন্দক। রাস্তাটির বহু এলাকা ধান ক্ষেতের আদল লাভ করে। ফৌজদারহাট-পতেঙ্গা রিং রোড থাকায় বহু মানুষ বিকল্প ওই সড়কটি ব্যবহার করলেও পতেঙ্গা থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত এলাকায় বসবাস করা হাজার হাজার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। এলাকাবাসী নানাভাবে রাস্তাটি সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে আসলেও বর্ষাকালসহ নানা কারণে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি।
অবশেষে রাস্তাটির সংস্কার শুরু হচ্ছে। আজ থেকে এই রাস্তাটিতে পিচ ঢালাই করা হবে। রাস্তার দু’পাশে কার্পেটিং করা হবে। একপাশে ৩০ ফুট করে মোট ৬০ ফুট এলাকায় পিচ ঢালাই করে রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করা হবে। এতে অন্তত ১৫ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, গতকাল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে বৈঠক করেন সিডিএর একটি প্রতিনিধিদল। মেয়র জানান যে, আগামী ৪ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সফর করবেন। তিনি পতেঙ্গা এলাকা থেকে সড়কপথে পলোগ্রাউন্ড মাঠে এসে জনসমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। তাই পতেঙ্গা থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত রাস্তাটিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চলাচলের উপযোগী করার জন্য তিনি সিডিএর প্রকৌশলীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সিডিএ সূত্র জানায়, বারিক বিল্ডিং থেকে আগ্রাবাদ হয়ে দেওয়ানহাট পর্যন্ত সড়কের অবস্থা মোটামুটি ভালো। এটুকুতে তেমন কিছু করতে হবে না। তবে বারিক বিল্ডিং থেকে পতেঙ্গা বিচ পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খারাপ। রাস্তার এই অংশের মাঝে মাঝে কিছু কিছু এলাকা কার্পেটিং থাকলেও বাকি অংশ পিচ ঢালাই করতে হবে। পুরো রাস্তাটির দুই পাশে অন্তত ৬০ ফুট রাস্তা পিচ ঢালাই করতে বেশ সময় লাগবে এবং এতে বেশ বড় অংকের অর্থ খরচ হবে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে আজ থেকে রাতে দিনে কাজ করা হবে বলেও সিডিএর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, প্রধানমন্ত্রী আসবেন আরো এক মাসেরও বেশি সময় পর। এত আগে রাস্তাটিতে পিচ ঢালাই করা হলে তা অতদিন টিকে থাকবে কিনা সংশয় রয়েছে। এই অবস্থায় রাস্তাটি যাতে প্রধানমন্ত্রীর আসা পর্যন্ত টিকে থাকে সেই ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এবং সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তাটির সংস্কার কার্যক্রম আজ থেকে শুরু করা হচ্ছে। আমরা মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাস্তাটির দু’পাশই ঢালাই করে দেবো। একপাশে ত্রিশ ফুট করে দুইপাশে অন্তত ৬০ ফুট রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমশক নিধনে ঢাকার দুই সিটির এক চতুর্থাংশ বরাদ্দ পেল চট্টগ্রাম
পরবর্তী নিবন্ধডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই