বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরাতে কাজ করায় মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে ‘আরসা’ গোষ্ঠী খুন করে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। তদন্তে মোট ২৯ জনকে আসামি করা হয়েছে, তাদের সবাই রোহিঙ্গা।
আরসা রোহিঙ্গাদেরই রাখাইনভিত্তিক একটি সশস্ত্র সংগঠন, পুরো নাম আরাকান রিপাবলিকান স্যালভেশন আর্মি। আর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মুহিবুল্লাহ গড়ে তুললেছিলেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) নামে আরেক সংগঠন। গত বছর মুহিবুল্লাহ খুন হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যদেরও সন্দেহ ছিল আরসার দিকে। প্রায় সাড়ে আট মাস তদন্তের পর আলোচিত এই মামলায় গতকাল সোমবার দেওয়া অভিযোগপত্রেও পুলিশ একই কারণই খুঁজে পাওয়ার কথা জানাল। খবর বিডিনিউজের।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, দুপুরে জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় কক্সবাজার পুলিশ। সেখানে মোট ২৯ জনকে আসামি করা হয়েছে, তাদের সবাই রোহিঙ্গা।
কক্সবাজার আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম হত্যার কারণ সম্পর্কে বলেন, অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করায় এর বিরোধীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আরসা নামধারী কথিত সন্ত্রাসীগোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় আরসাসহ প্রত্যাবাসন বিরোধী মহল তার উপর ক্ষিপ্ত ছিল।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার ১–ইস্ট লম্বাশিয়া ক্যাম্পে ৪৮ বছর বয়সী রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী।
মামলার তদন্তকারীরা জানান, হত্যাকাণ্ডে মোট ৩৬ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য পেলেও সাতজনের ঠিকানা ও অবস্থান জানতে না পারায় শেষ পর্যন্ত ২৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হল। অভিযোগপত্রে নাম থাকা ২৯ আসামির মধ্যে ১৫ জন গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন, বাকি ১৪ জন পলাতক। গ্রেপ্তার ১৫ জনের মধ্যে ৪ জন তদন্ত চলাকালে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।