প্রতিবেশী, ভাল আছেন তো?

শিউলী নাথ | সোমবার , ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

‘প্রতিবেশী’ হলেন আমাদের সীমানার ও প্রান্তে যিনি আছেন তিনি। এ সীমানা কখনো ঘরের সীমানা, কখনো দেশের সীমানা। ঐতিহাসিক থমাস ফুলার বলেছেন ‘আমরা বন্ধু ছাড়া বেঁচে থাকতে পারি কিন্তু একজন প্রতিবেশী ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভ’। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখলে দেশকে যেমন বহিঃশত্রুর আক্রমণ বা যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করা সম্ভব তেমনি দরজার ওপাশে যে প্রতিবেশী তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকলে নিত্যদিনের সুখ দুঃখগুলো ভাগ বাটোয়ারা করে শান্তিতে বাস করা সম্ভব। একবার যদি প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক হয়ে যায়, তবে পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকনা কেন, সম্পর্ক সহজেই ছিন্ন করা যায় না। মানুষের ভালো ব্যবহার অন্য মানুষকে পরিবর্তনে বাধ্য করে। তাই মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি খুবই প্রয়োজন। প্রতিবেশীর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে হলে নিজেকেও উদার মনের হতে হবে। কেননা, কোনো সম্পর্কই একপেশে হয়না। আমি যদি আমার প্রতিবেশীর খোঁজ খবর না নিই, তাহলে প্রতিবেশীর কাছ থেকে তা কীভাবে প্রত্যাশা করি? কিছু প্রতিবেশী আছেন যারা শত কাজের ব্যস্ততার মাঝেও পাশের ঘরের মানুষগুলো কেমন আছেন খবরাখবর নিয়ে থাকেন। রাত দুপুরে অসুস্থ হলে যখন আপনজনেরা অনেক দূরে থাকেন, তখন প্রতিবেশীই এগিয়ে আসেন ত্রাতা হয়ে। ভোরের সূর্যের হাসির সাথে সাথে দরজা খোলার পর ওপাশ থেকে যে হাসিমুখ দেখে মন ভরে যায়, অমন প্রতিবেশী ক’জনের ভাগ্যে জোটে? আবার দীর্ঘদিন পাশাপাশি বাস করা প্রতিবেশী কাজের অযুহাতে একে অপরের দিকে ফিরে তাকানোরও সময় পান না। এমনও নজির আছে-পাশের ঘর থেকে মৃতদেহ বের করার পরও প্রতিবেশী জানতে পারেন না, কে মারা গেল? যান্ত্রিক এ যুগে একজন ভালো মনের প্রতিবেশী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার! সমমনা প্রতিবেশী পাওয়া খুবই দুরুহ। প্রতিবেশী যদি নিন্দুকের ভূমিকায় অবর্তীণ হন, তাহলে সেখানে অশান্তি হওয়াই স্বাভাবিক। অপরের খুঁত না ধরে, খুঁতগুলো দূর করার ব্যবস্থা করার মধ্যে মহত্ত্ব লুকিয়ে আছে। প্রতিবেশী দেশ বা প্রতিবেশীজন যদি উদারমনা না হয়, তবেই দুর্যোগের ঘনঘটা শুরু হয়। হেছয়েড এর মতে, ‘একজন ভালো প্রতিবেশী আপনার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ”। তাই যতদূর সম্ভব অন্তত হাসি মুখে প্রতিবেশীদের সাথে মত বিনিময় করা উচিৎ এবং এটুকু বলা-ই যায়’ আপনি ভালো আছেন তো? লেখক: শিক্ষক ও কবি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআসুন, সুন্দর সমাজ গড়ি
পরবর্তী নিবন্ধখুব দ্রুত আমাদের চেনা পৃথিবীটা বদলে যাচ্ছে