পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সারাদেশে যখন গাছ লাগানোর সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠছে সে সময় বাঁশখালীর পুকুরিয়া চন্দ্রপুর পাহাড়ের সরকারি খাস জায়গার কয়েকশত গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনের নির্দেশে বনবিভাগ গাছগুলো জব্দ করেছে। এ ব্যাপারে পুকুরিয়া বন বিট কর্মকর্তা আশরাফ চৌধুরী বলেন, গাছ কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেগুলো জব্দ করে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, বাঁশখালীর পুকুরিয়ার চন্দ্রপুর পাহাড়ি এলাকার প্রায় ১০ একর জায়গার কয়েকশত গাছ পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসহাব উদ্দিনের নির্দেশে তার সহযোগীরা কেটে ফেলে। পাহাড়ের সারি সারি গাছ কাটার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বনবিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়। বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু গাছ জব্দ করে তা স্থানীয় এক ইউপি সদস্য মুনিরুল মান্নান চৌধুরীর জিম্মায় দেয়া হয়। ইউপি সদস্য মুনিরুল বলেন, বনবিভাগ ও পুলিশের উপস্থিতিতে ২০০ টুকরা গাছের একটা জিম্মানামা আমাকে দেয়া হয়েছে।
গাছ কেটে ফেলার ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. আহসাব উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জায়গাটি সরকার থেকে লিজ নেওয়া। তিনি সেখানে গাছ রোপণ করেন এবং অনুমতি সাপেক্ষে কাটার উদ্যোগ নেন। তবে অনুমতিপত্র দেখাতে বললে তিনি দেখাতে পারেননি।
একদিকে সরকারি জায়গা অপরদিকে অনুমতি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকা এ জায়গাটি আবার চা বাগানের বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে জায়গাটি কার তা নির্ধারণে আজ (বুধবার) চা বাগান কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করবে বলে সূত্রে জানা যায়। একটি সূত্র জানায়, বাঁশখালীর পুকুরিয়া ও সাধনপুর এলাকার অধিকাংশ পাহাড়ি এলাকা পুকুরিয়া বেলগাঁও চা বাগানের নামে সরকারিভাবে দীর্ঘ মেয়াদি লিজ দেওয়া হলেও সেখানে আধিপত্য বিস্তার করে অনেকে তা দখল–বেদখল করে রেখেছে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, পুকুরিয়ার পাহাড়ি এলাকার গাছ কাটার ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি দেয়া হয়নি। বেআইনিভাবে গাছ কেটে থাকলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।