পাহাড় ও হ্রদের শহর

রেজাউল করিম | সোমবার , ৩ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

উঁচু-নিচু,সরু-ঢালু পথ চলতে চলতে
হঠাৎ থমকে দাঁড়ায় সন্নিকটে
আগন্তুকের দল কোনো এক জলঘাটে-
কিনারে শুভ্র সিতপুষ্প নাচে
রোমাঞ্চের আবেশ ছড়ায়
আনাচে-কানাচে।

ভোরের আলোর ছড়াছড়ি বিপুলা
জলরাশি যেন ষোড়শী প্রাণচঞ্চলা
আনন্দে আত্মহারা;
জনতার স্বকণ্ঠে
পাহাড় ও হ্রদের শহর
জেগে ওঠে।

ট্যা-ট্যা শব্দসুরে নৌযান
ছুটে চলে
স্বপ্নের তীরে-
শ্যামল তারুণ্যের হুড়োহুড়ি নাচানাচি
জলে চাপিলার স্নেহমাখা হাসি,
রুই-কাতলার পাখনার তালে তালে
বিপুলা জল নড়েচড়ে,অদূরে কূলে ভাঁজে
ভাঁজে খাঁজে খাঁজে প্রাগৈতিহাসিক
পাথুরে পাহাড় ইশারায় ডাকে।

আশ্বিনের প্রখর রুদ্রে গা পুড়ে মন জ্বলে
বিপুলা জলরাশির কী উদার বিস্তার!দূর
আকাশ পাতালমুখী দিগন্তে নুয়ে পড়ে।

ভাসমান কামার্ত কচুরিপানা জলমগ্ন,
ছুটে চলে ক্ষুধার্ত ডিঙি নৌকা,ধীবর
বৈঠা নিয়ে কী নিরন্তর জীবনসংগ্রামে!
পাহাড়ের বুকে ঢল নামে
জুমিয়াদের ঘামে।

জলে ভাসে পাতিহাঁস, ডাহুক, পানকৌড়ি;
আকাশে উড়ে গাঙচিল, শাদাবক
হাতি, হরিণ, উল্লুক প্রাণচঞ্চল; মৃগয়ার
উঁকিঝুঁকিতে সন্তর্পনে পথচলে অরণ্যে-

ক্ষুধার্ত সংঘবদ্ধ বানরের
দল দ্বিপদীদের
সান্নিধ্যে হা করে তাকিয়ে থাকে,চূড়ায়
মন্দিরে দেবী দেবযানী
আলো ছড়ায় আশপাশ।

ঝরনার শির শির জলের ছোঁয়ায়
আগন্তুকের মনে আগুন জ্বলে।
আদিবাসীরা পণ্যের পসরা সাজিয়ে
বিকিকিনির জন্য আর্তনাদ করে।

ছুটে চলে নৌযান তীরে,জল ও সবুজ
অরণ্য মায়াজালে বন্দি করে অস্থিরমন।
ঝুলন্ত সেতু এলেবেলে হেলেদুলে
তারুণ্যের পদস্পর্শে রোমাঞ্চের আবহ
ছড়ায় চারদিক, ক্লিক ক্লিক ক্লিক…
ফুরোমন,শুভলং স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে-

সূর্য ডুবুডুবু, পলওয়েল পার্ক ডাকে-
সন্ধ্যা নামে, আকাশ পাহাড় হ্রদ
মালভূমি চাঁদনিরাত যেন একাকার।
ঝিঁঝি পোকার গানে
পাহাড় ও হ্রদের শহর
কী জমজমাট আজ!

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিয়ন্ত্রিত হোক গাড়ির গতি
পরবর্তী নিবন্ধতবুও স্বপ্ন সুন্দর