পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু

প্রথম দিন বায়েজিদ লিংক রোডের আশপাশে অভিযান, গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ৩৭০ বসতি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৫ জুন, ২০২১ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

এবারের বর্ষা মৌসুমে কোনো রকম মৃত্যুঝুঁকি নিতে চাইছে না জেলা প্রশাসন। পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে উঠা অবৈধ বসতিগুলোকে উচ্ছেদে অভিযান শুরু করা হয়েছে। গতকাল সোমবার প্রথমদিন বায়েজিদ ফৌজদারহাট লিংক রোডের দুই পাশের পাহাড়গুলো থেকে ৩৭০ বসতিকে উচ্ছেদ করা হয়। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে এ অভিযান। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তারা ৩টি দলে ভাগ হয়ে লিংক রোডের তিনটি অংশে অভিযান পরিচালনা করেন। অংশগুলো হচ্ছে, লিংক রোডের হাটহাজারী অংশ, সীতাকুণ্ড অংশ ও নগর অংশ।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রায় ৩০০ জনবল ও ৩টি এঙাভেটরের সহায়তায় বায়েজিদ লিংক রোডের নগর অংশ থেকে ১১০টি, সীতাকুণ্ড অংশ থেকে ৭০টি এবং হাটহাজারী অংশ থেকে ১৯০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অধিকাংশ স্থাপনা টিনের তৈরি ঘর। কিছু রয়েছে সেমিপাকা।
অভিযান পরিচালনার সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিচালক নুরুল্লাহ নূরীসহ তার টিম। এছাড়া পিডিবি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিসট্রিবিউশন, ওয়াসা, ফায়ার সার্ভিস, র‌্যাব ও পুলিশের একটি করে টিম উপস্থিত ছিলেন। উচ্ছেদ অভিযানে শ্রমিকের কাজ করেন ৬০ জন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের হাটহাজারী অংশে অভিযান চালান হাটহাজারীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) শরীফ উল্যাহ ও পতেঙ্গা সার্কেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ। সীতাকুণ্ড অংশে অভিযান চালান সীতাকুণ্ডের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) মো রাশেদুল ইসলাম ও সদর সার্কেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা জান্নাত। নগর অংশে অভিযান চালায় চান্দগাঁও সার্কেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) মামনুন আহমেদ অনীক ও কাট্টলী সার্কেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইনামুল হাসান।
সূত্র আরও জানায়, অভিযান পরিচালনাকারী প্রতিটি দলের সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা ও সার্ভেয়াররাও অভিযানস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসকের স্ট্যাফ অফিসার ওমর ফারুক আজাদীকে বলেন, কোনো ধরনের বাধা বিপত্তি ছাড়াই বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের দুই পাশের পাহাড় থেকে ৩৭০ বসতি উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই বাড়িঘর। অল্প কিছু হচ্ছে দোকানপাট। উচ্ছেদকৃত এসব বসতিতে প্রায় ১ হাজারের মতো মানুষ বসবাস করতেন উল্লেখ করে ওমর ফারুক আরও বলেন, আমাদের এ অভিযান চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসের আশঙ্কাকে মাথায় নিয়ে সেখানে থাকা অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্তটি নিয়েছে চট্টগ্রামের পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি। এ কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার। সদস্য সচিব হিসেবে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান। তিনি জানান, বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা পূর্বে অনেক ঘটেছে। এবারের বর্ষায় এমন কিছু আমরা প্রত্যাশা করছি না। তাই পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সবগুলো পাহাড় থেকেই পর্যাক্রমে সকল অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড় দখলের সহযোগী পিডিবি!
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬