পাহাড়খেকোর দৌরাত্ম্যে ভরাট হচ্ছে নালা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীর জিইসি মোড় সংলগ্ন গরিবুল্লাহ শাহ হাউজিংয়ের পাশ থেকে এমইএস কলেজের সামনে পর্যন্ত রাস্তার পাশে স্তূপাকারে জমা করা হয়েছে বালি। রাস্তার পাশের নালা থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বালি তুলে জড়ো করছেন। নিকটস্থ একটি পাহাড় থেকে আসা বালিতে পুরো নালাটি ভরাট হয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সময় নানা কৌশলে এই পাহাড় থেকে বালি ধসে পড়ে। পাহাড়টি ধসে পড়ার জন্যই নানা কৌশলের আশ্রয় নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। নগরীর দুই নম্বর গেট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত রাস্তার পাশে বিশাল একটি নালা। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় এই নালায় নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু নালাটির প্রায় পুরোটাই বালিতে ভরাট হয়ে রয়েছে। নগরীর হোটেল লর্ডস ইনের পাশ থেকে কাউন্সিলর চত্বর পর্যন্ত রাস্তার পাশের বিশাল নালাটির প্রায় পুরোটাই ভরাট। বালি-কাদায় একাকার এই নালা দিয়ে এই শুষ্ক মৌসুমের সামান্য পানি চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। অক্সিজেন মোড়। রাস্তার পাশের নালাটির বেহাল অবস্থা বলে দেয় সামনের বর্ষায় নগরবাসীর কপালে দুঃখ আছে।
এভাবে নগরীর বেশিরভাগ নালা বালি ও মাটিতে ভরাট হয়ে রয়েছে। ভরাট রয়েছে নগরীর প্রায় প্রতিটি খাল। নানা কৌশলে পাহাড় কাটার কারণে নগরীর বেশিরভাগ নালা ভরাট হয়ে যায়। আর নালার বালি গিয়ে পড়ছে খালে। নগরীর প্রতিটি নালা যেভাবে বালিতে ভরে উঠছে তাতে আসন্ন বর্ষায় পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নগরীতে বাস্তবায়নাধীন প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের সুফল নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশনের প্রথম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে প্রায় ১৬শ কিলোমিটার নালা। গড়ে ৪ ফুট প্রস্থের দেড় শতাধিক নালা লোকালয় থেকে গিয়ে পড়েছে খালে। মূলত নালা দিয়ে পানি যাওয়ার পথ সুগম থাকলে জলাবদ্ধতা নিরসন অনেক সহজ হয়। ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে নগরীর অনেক নালা সংস্কার, নির্মাণ ও বালি উত্তোলন করার কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অনেক নালা সংস্কারও করা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, নালাগুলো নানা আবর্জনায় ভরাট হচ্ছে। একদিকে পরিষ্কার করা হচ্ছে, অন্যদিকে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি পাহাড়খেকো একটি চক্রের দৌরাত্ম্যে নগরীর নালাগুলো ভরাট থাকে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নগরীর বিভিন্ন স্থানে নানা কৌশলে পাহাড় কাটা চলছে। রাতে-দিনে চলছে কাটার কাজ। এসব পাহাড়ের মাটি ও বালি এসে পড়ছে নালায়। নালা থেকে যাচ্ছে খালে। এর সাথে বাসাবাড়ির আবর্জনায়ও নালা ভরাট হচ্ছে।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, নগরীতে ১৬শ কিলোমিটারের মতো ড্রেন রয়েছে। এসব ড্রেনের বেশিরভাগে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় সিডিএ কাজ করছে। খালগুলোর বেশিরভাগের কাজও সিডিএ করছে। আমরা ছোটখাটো কিছু খাল পরিষ্কার করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচার দোকানদারকে জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১৬ বছরের কারাদণ্ড