পাহাড়ে জলকেলিতে সাঙ্গ হলো সাংগ্রাই উৎসব

প্রান্ত রনি, রাঙামাটি | বুধবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্ষবরণে সাংগ্রাই উৎসবের সাঙ্গ হলো মারমা তরুণতরুণীদের জলকেলির মধ্য দিয়ে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাঙামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে মারমা জাতিগোষ্ঠীর সাংগ্রাই জল উৎসবে তরুণতরুণীরা একেঅন্যকে ‘মৈত্রী পানি বর্ষণ’ করে জলকেলিতে মেতে ওঠেন। রাঙামাটির এই জল উৎসবে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলার সাতটি উপজেলা থেকে মারমা জনগোষ্ঠীর মানুষ অংশগ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে আয়োজক কমিটি মাসস।

বেলা ১২টায় উৎসবের অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হওয়ার পরই শুরু হয় সাংগ্রাই জল উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। উৎসবে গেস্ট অব অনার ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি এবং উদ্বোধক ছিলেন দীপংকর তালুকদার এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, সেনাবাহিনীর রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান এবং পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল স্রোতধারার সঙ্গে সামিল করার ক্ষেত্রে আপনারা যেন অনন্য ভূমিকা রাখতে পারেন সেই প্রার্থনা করছি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা আলাদা থাকতে পারে, ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি হতে পারে। কিন্তু এই দেশ আপনার, আমার, আমাদের সকলের। এই দেশের উন্নয়নের জন্য শান্তির জন্য মানুষের কল্যাণের জন্য আমরা যেন শপথ করি বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য ভূমিকা রাখতে পারি। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি সম্প্রীতি উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও যেন শক্তিশালী হয়। শক্তিশালী করার জন্য আমরা যেন সকলে মিলে কাজ করি।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ আমাদের বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ; সম্প্রীতির বন্ধন। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সকলে আমরা মিলেমিশে উদযাপন করি, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলেনউৎসবে সকলে মিলে আমরা উৎসব করি আনন্দ করি। আমরা মনে করি বাংলাদেশ সকলের। আমরা সকলই বাংলাদেশের জনগণ। কাউকে ফেলে কেউ এগিয়ে যেতে পারে না। বাংলাদেশের সকল জেলার প্রান্তিক এলাকায় যেভাবে উন্নয়ন হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য জেলাতেও সেভাবে উন্নয়ন করেছেন।

আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ‘মং’ ঘণ্টা বাজিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপর জলকেলি উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। পরে শুরু হয় মারমা নৃত্য শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন তিন পার্বত্য জেলার সাতটি উপজেলা থেকে আগত বিভিন্ন গ্রামপাড়ার মারমা তরুণতরুণী থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষ। জল উৎসবে মারমা জনগোষ্ঠী ছাড়াও রাঙামাটির চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, বাঙালিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদমন নিপীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায় সরকার
পরবর্তী নিবন্ধমেয়রের সাথে শামীমা হারুন লুবনা এমপির সৌজন্য সাক্ষাৎ