পাকিস্তান সরকারের আরবি হরফ প্রচলনের প্রতিরোধ অব্যাহত থাকে

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

১৯৪৮ সালের মার্চ থেকে পাকিস্তান সরকারের আরবি হরফ প্রচলনের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিক্রিয়া ও প্রতিরোধ অব্যাহত থাকে। ১৯৪৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক সভায় আরবি হরফ প্রচলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। এ সভায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সংসদ গঠন করা হয়।

মো. নুরুল ইসলাম সভাপতি এবং ইলা দাশগুপ্তা ও আশরাফ সিদ্দিকী যুগ্মসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এছাড়া নজরুল ইসলাম, মমতাজ বেগম, রিজিয়া খাতুন, খলিলুর রহমানসহ অন্যদের নিয়ে বর্ণমালা সাবকমিটি গঠিত হয়। এদিকে এর প্রতিবাদে ১৯৪৯ সালের ১২ মার্চ ছাত্র ফেডারেশন বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে ছাত্রদের একটি বিক্ষোভ মিছিল পরিষদ ভবনের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়।

বেশ কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৪৯ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের ভাষা কমিটির পক্ষ থেকে নঈমুদ্দিন আহমদ সংবাদপত্রে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষিত লোকের হার শতকরা ১২ থেকে ১৫ জন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানে শিক্ষিত লোকের হার শতকরা ৫ জনের কম; আরবি বর্ণমালার দোহাই দিয়ে এই ১৫ জন শিক্ষিতকে কলমের এক খোঁচায় অশিক্ষিতে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। এর ফলে গোটা পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থাই বানচাল হয়ে যাবে।’ বাস্তবে ঘটছিলও তাই। পাকিস্তানের রাজধানী হলো পশ্চিম পাকিস্তানে। সব কেন্দ্রীভূত হচ্ছিল পশ্চিমে। পূর্ব বাংলা যে ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ হয়ে উঠছে, সেই বোধও গ্রাস করছিল এ অঞ্চলের মানুষদের। বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার পাঁয়তারা শুরু হয়। পূর্ব বাংলার সর্বস্তরের মানুষ ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার প্রেরণা পায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাতুনগঞ্জে চিনির বাজারে অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধমৃত মেয়ের হাত ধরে বসে আছেন বাবা