পতেঙ্গায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ও পাইলট নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

কর্ণফুলী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৯ মে, ২০২৪ at ৭:৪৫ অপরাহ্ণ

পতেঙ্গা কর্ণফুলী নদীতে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ও স্কোয়াড্রন লীডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ নিহত হওয়ার ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে তদন্ত কমিটিতে কারা রয়েছেন, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু জানানো হয়নি।

জানা যায়, সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিকল্পনা) এয়ার ভাইস মার্শাল মু. কামরুল ইসলাম, বিবিপি, বিএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি ঢাকা থেকে দূর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং উদ্ধার কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক এর এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে এম শফিউল আজম, ওএসপি, জিইউপি, এনডিসি, পিএসসি দুর্ঘটনা পরবর্তী কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করছেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে কর্ণফুলী নদীতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান (ইয়াক-১৩০) বিধ্বস্ত হয়। এসময় পাইলট উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন, পিএসসি এবং স্কোয়াড্রন লীডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ জরুরী প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে নেমে পড়েন।

পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদেরকে উদ্ধার করে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাইলট আসিম জাওয়াদ মারা যান। অপর পাইলট মো. সোহান হাসান খান বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ। তার পিতার নাম ডা. মো. আমান উল্লাহ এবং মাতার নাম নীলুফা আক্তার খানম।

তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে ২০০৭ সালে এসএসসি, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে বিএসসি (অ্যারো) পাস করেন।

পরবর্তীতে ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন। ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার প্রাপ্তিসহ জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। তিনি বিমানবাহিনীতে চাকরিকালে বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে নিয়োজিত ছিলেন। চাকরিজীবনে তিনি পেশাদারী দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘মফিজ ট্রফি’, ‘বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি’ ও বিমানবাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এছাড়া তিনি ভারতীয় বিমানবাহিনী কোর্সে অংশগ্রহণ করে ‘Chief of Air Staff’s Trophy for Best in Flying (Indian Air Force)’ অর্জন করেন।

চাকরিকালে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ দেশে ও বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সেও অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ থেকে এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর্স পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন।

মৃত্যুকালে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের বয়স হয়েছিল ৩২ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র, বাবা-মা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এছাড়া বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, বিবিপি, বিইউপি, এনএসডব্লিউসি, এফএডব্লিউসি, পিএসসি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। দুর্ঘটনায় পতিত বিমানটিকে উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে ৪০ লাখ টাকার ‘স্ক্র্যাপ চানাচুর’ নিয়ে দুই গ্রুপের হাতাহাতি
পরবর্তী নিবন্ধপেকুয়ায় প্রশাসনের অভিযানে ২ বেকারীকে অর্থদণ্ড