ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিউ মার্কেট এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ধানমণ্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে নিউ মার্কেটের সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরাই জড়িত অভিযোগ করে বিএনপি নেতাদের নামে দেওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিকেলে ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইফতার মাহফিলপূর্ব আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণে আজকে দেশে এক দুঃসহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা দেখেছেন যে, কয়েকদিন আগে নিউ মার্কেট অঞ্চলে ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে সংঘর্ষ, সেই সংষর্ষ সম্পূর্ণভাবে সরকারের ব্যর্থতা ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে যে, শুধু নিষ্ক্রিয়তার নয়- তাদের ইন্ধনে এটা হয়েছে। এজন্য যে, আমরা দেখেছি, পরবর্তীকালে বিভিন্ন মিডিয়ায় ও পত্র পত্রিকায় যে সংবাদগুলো এসেছে সেই সংবাদে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সন্ত্রাসের সাথে সম্পূর্ণভাবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জড়িত ছিল।
এ ঘটনায় বিএনপি ও ছাত্র নেতাদের দায়ী করে পুলিশের মামলা দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ফখরুল অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
মকবুল হোসেন নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি। ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামের যে দুই দোকানের কর্মচারীদের দ্বন্দ্ব থেকে গত সোমবার রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়, সেই দোকান দুটি সিটি কর্পোরেশন থেকে মকবুলের নামে বরাদ্দ হওয়া। তবে কোনো দোকানই নিজে চালাতেন না। রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন দোকান দুটি। রফিকুল ও শহিদুল আবার পরস্পরের আত্মীয়।
মকবুল দাবি করে আসছেন, বিএনপি করার কারণে পুলিশ তাকে এ মামলার আসামি বানিয়েছে।
দোকান মালিকদের ভাষ্য, ইফতারের টেবিল বসানো নিয়ে ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মীদের বচসার পর এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে। তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে বাঁধে সংঘর্ষ। মঙ্গলবার দিনভর চলা এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। তাদের মধ্যে এক দোকানকর্মী আর এক ডেলিভারিম্যান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।