নারী যদি জামিন অযোগ্য অপরাধ করে থাকে

রিমঝিম আহমেদ | শনিবার , ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

পুরুষশাসিত এসমাজে নারীরা নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয় এটাই সবার বদ্ধমূল ধারণা ও বিশ্বাস কিন্তু এর বিপরীতটাও যে ঘটে তা অনেকে বিশ্বাস করতে চায় না। স্বভাবতই নারী নির্যাতন, যৌননিপীড়ন, যৌতুক, অ্যাসিড নিক্ষেপ, তালাক, হত্যা ও ধর্ষণের মতো নানা ধরনের অপরাধের শিকার অধিকাংশই নারী।

প্রতিটি মানবসন্তানের জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি নারীর নানামুখী ভূমিকার গুরুত্ব অপরিসীম। নারীকে সাধারণত মমতাময়ী মা, স্নেহময়ী বোন সর্বোপরি সর্বংসহা চরিত্র হিসেবে দেখে আসছে সমাজ এবং নারীদের দ্বারা মারাত্মক ও জঘন্য অপকর্ম সংঘটিত হবে না মর্মে সবাই বিশ্বাস করে থাকেন।

কিন্তু এটাও সত্যি অপরাধীর কোনো লিঙ্গ নাই। অপরাধী মানেই আইনের দৃষ্টিতে লিঙ্গ নিরপেক্ষভাবে অপরাধী। বর্তমান সময়ে পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নারী অপরাধপ্রবণতাও। উল্লেখ করার মতো বিষয় হচ্ছে, নারীরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে ত্বরিত মারাত্মক সব অপরাধ সংঘটন করে থাকে।

আলোচনার বিষয় হলো কোনো নারী যদি জামিন অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ করে থাকে, তাহলে সে জামিন পেতে পারে কি না! কী কী পরিস্থিতে এবং কোন ধারাবলে পেতে পারে? ফৌজদারি কার্যবিধি১৮৯৮এর ৪৯৭ ধারায় বলা হয়েছেজামিন অযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে যখন জামিন মঞ্জুর করা যাইবে :

() জামিন অযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার কর্তৃক বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার হইলে আটক থাকিলে অথবা আদালতে হাজির হইলে বা তাহাকে হাজির করা হইলে, তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যাইতে পারে, কিন্তু সে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় কোন অপরাধে অপরাধী বলিয়া বিশ্বাস করিবার মত যুক্তিসংগত কারণ থাকিলে তাহাকে উক্তরূপে মুক্তি দেওয়া যাইবে না:

তবে শর্ত এই যে, এইরূপ অপরাধে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি ষোল বৎসরের নিম্ন বয়স্ক বা স্ত্রীলোক বা পীড়িত বা অক্ষম হইলে আদালত তাহাকে জামিনে মুক্তি দিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।

() তদন্ত অনুসন্ধান বা বিচারের কোনো পর্যায়ে উক্ত অফিসার বা আদালতের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, আসামী কোনো জামিন অযোগ্য অপরাধ করিয়াছে বলিয়া বিশ্বাস করিবার মত যুক্তিসংগত কারণ নাই, তবে তাহার দোষ সম্পর্কে আরও তদন্তের পর্যাপ্ত ভিত্তি রহিয়াছে, তাহা হইলে এইরূপ তদন্ত সাপেক্ষে আসামীকে জামিনে অথবা উক্ত অফিসার বা আদালতের বিবেচনামূলক ক্ষমতায় অতঃপর বর্ণিতভাবে সে হাজির হইবার জন্য জামিনদার ব্যতীত মুচলেকা সম্পাদন করিলে তাহাকে মুক্তি দিতে হইবে।

() কোনো অফিসার বা আদালত () উপধারা বা () উপধারার অধীন কোনো ব্যক্তিকে মুক্তি দিলে তাহার ঐরূপ করিবার কারণ লিপিবদ্ধ করিবেন।

() জামিন অযোগ্য কোনো অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার সমাপ্ত হইবার পর এবং রায় দানের পূর্বে কোনো সময় আদালত যদি মনে করে যে, আসামী উক্ত অপরাধে অপরাধী নহে বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে, তাহা হইলে আসামী হাজতে থাকিলে রায় শ্রবণের উদ্দেশ্যে হাজির হইবার জন্য জামিনদার ব্যতীত মুচলেকা সম্পাদনের পর তাহাকে মুক্তি দিবে।

() হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা আদালত এবং নিজে মুক্তি দিয়া থাকিলে, অন্য কোনো আদালত এই ধারার অধীন মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করাইতে ও তাহাকে হাজতে প্রেরণ করিতে পারিবে।

লেখক: শিশুরক্ষা সমাজকর্মী

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকদিন সকালে
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে বিশেষ স্টুডেন্ট সেমিনার