চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির প্রমাণ দিতে বললেন আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল। গতকাল সোমবার বিকালে নগরের দি কিং অব চিটাগাং–এ নগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি চট্টগ্রামের দুই নেতার প্রতি এই আহ্বান জানান।
নিখিল বলেন, এখানে মঞ্চে উপস্থিত সব নেতা ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। এরপরও আমার চেয়ারম্যান লজ্জা পান, আমরা লজ্জা পাই, কষ্ট পাই। কেন জানেন? আমরা দেখতে পাই, এখানে নাছির ভাইয়ের নাম নিলে–মঞ্চের ডান পাশ থেকে স্লোাগান হয়, মহিবুল হাসান ভাইয়ের নাম নিলে মঞ্চের বাম পাশ থেকে স্লোগান হয়। নেতাদের মধ্যে ঐক্য না এলে কর্মীদের মধ্যে একতা আসবে না। আপনারাই বলেন, এই নাছির ভাই ও মহিবুল ভাই কার আদর্শ ধারণ করেছেন? আপনারা কি শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করেন নাই?
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন। চট্টগ্রামে রাজনীতি করতে হলে নাছির ভাই, নওফেল ভাই গ্রুপ করতে হবে; এ চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সবাইকে এখন এক হয়ে কাজ করতে হবে। আর কোনো ভেদাভেদ থাকা যাবে না। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি।
বক্তব্যে তিনি যেসব কর্মীরা স্লোগান দিয়েছেন তাদের নাছির–নওফেল গ্রুপের রাজনীতি না করে শেখ হাসিনার আদর্শে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, বিএনপি আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, হুংকার দিতে চায়। নাছির ভাই, মহিবুল ভাই, আপনারা কি এসব দেখেন না? আমার কথায় হয়তো আপনারা মনে কষ্ট পাবেন। তবু বলছি, আপনারা এক হন। আমিতো এই চট্টগ্রামের খবর রাখি। চট্টগ্রামে রাজনীতি করলে নাছির গ্রুপ করতে হবে। না হলে চট্টগ্রামে থাকা যাবে না। চট্টগ্রামের রাজনীতি করলে মহিবুল হাসান গ্রুপ করতে হবে। না হলে চট্টগ্রামে থাকা যাবে না। এসব বন্ধ করেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা কি দেখেন নাই, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা তার বাবা–মাকে হারিয়ে, পরিবারের সবাইকে হারিয়ে একা বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন। দিন–রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। কিন্তু আমরা এখানে গ্রুপিং করে সুন্দর একটি আদর্শকে, রাজনৈতিক দলকে গ্রুপিয়ে বিভক্ত করছি। আমি দেখতে চাই, এই বীর চট্টলার মাটিতে যেন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে মিছিলে নামে। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি স্লোাগান দিতে চান, তাহলে নাছির ভাই–নওফেল ভাই দুজনের নামে দিবেন।
তিনি বলেন, বিএনপি–জামাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে যুবলীগ আজ ঐক্যবদ্ধ। আপনারা (আজম নাছির উদ্দীন–মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল) প্রমাণ করবেন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ সবাই এক; সবাই শেখ হাসিনার অনুসারি।
নিখিল বলেছেন, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। নেতাদের মধ্যে যদি ঐক্য না থাকে কর্মীদের মাঝেও ঐক্য আসার কোনো সুযোগ নেই। আর কর্মীদের মাঝে যখন ঐক্য থাকবে না; তখন বিএনপি–জামাত যেমনি করে ২০০১–২০০৬ সাল এ বাংলায় তান্ডবলীলা চালিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাত পা কেটে দিয়েছিলেন, চোখ উপড়ে ফেলেছেন, পঙ্গু করে দিয়েছেন, ব্যবসা–বাণিজ্য কেড়ে নিয়েছেন। গোয়ালের গরু, পুকুরের মাছ কেড়ে নিয়েছেন, গাছপালা কেটে ছাড়খাড় করে দিয়েছেন। সেদিন যদি এ চট্টগ্রামের নেতারা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতেন আর কর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতেন বিএনপি–জামাতের দাঁতভাঙা জবাব দিতে এ নেতৃত্বই যথেষ্ট ছিল।
কমিটি বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে কমিটি বাণিজ্যের কথা উঠেছে। আমি সবার উদ্দেশে বলতে চাই, আমাদের চেয়ারম্যান মানবিক যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলে শামস্ পরশ থাকা অবস্থায় কমিটিতে যোগ্য মানুষরাই আসবেন। এ যুবলীগ মাদক ও জুয়ার যুবলীগ না। তাই এখানে কমিটি বাণিজ্য হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। পরশ–নিখিলের সই করা কাগজে সন্ত্রাসী–চাঁদাবাজ–দুর্নীতিবাজ–মাদক ব্যবসায়ীর যুবলীগের স্থান হবে না।