নতুন টাকা ব্যাংকে নয় মিলছে ফুটপাতে

গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দাম

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৬ মে, ২০২১ at ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ

ঈদে নতুন জামার সাথে চাই নতুন টাকা। বিশেষ করে বাড়ির বড়রা শিশু কিশোরদের নতুন টাকায় ঈদ সেলামি দেন। নতুন টাকার ঘ্রাণ ঈদ আনন্দে যুক্ত করে নতুন মাত্রা। এছাড়া ফিতরা দিতে ব্যবহার হয় নতুন টাকা। তবে গত বছরের মতো এবছরও বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বসাধারণের জন্য নতুন টাকা বিতরণের সুযোগ রাখেনি। করোনা সংক্রমণ রোধে লোকজনের ভিড় এড়াতে নতুন টাকা বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে সরকারি ও বেসরকারি তফসিলি ব্যাংকে প্রতি বছরের মতো এবছরও নতুন টাকা বরাদ্দ দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা।
এদিকে অনেক মানুষকে নগরীর ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ হকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্যে নতুন টাকা কিনে নিতে দেখা গেছে। নতুন টাকা বিক্রেতারা বলছেন, এ বছর নতুন টাকা বিক্রির অবস্থা খুব খারাপ। সারাদিনে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৪ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হচ্ছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকা বাজারে চলে গেছে। এখনো ১০-১১ হাজার কোটি টাকার নোট আছে। ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বাজারে নোট ছাড়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নোটের মধ্যে রয়েছে ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০ এবং ৫০০ টাকার নোট। আগের মতো সমপরিমাণ পুরনো নোট বাজার থেকে অপসারণ করা হবে। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো নতুন নোট ছাড় করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গতকাল নগরীর নিউমার্কেট মোড়, জিপিও, কোতোয়ালী মোড় আদালত ভবনের ফটক, জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাতে নতুন টাকা নোট নিয়ে বেঞ্চিতে বসে আছেন নোট বিক্রেতারা। এদেরই একজন আবদুল আউয়াল। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদ মৌসুম এলে নতুন টাকার ব্যবসা করি। গত বছর সব কিছু বন্ধ থাকার কারণে ব্যবসা করতে পারিনি। এছাড়া মাঝে মধ্যে পুলিশ ডিস্টার্ব করে। তবে মনে করেছিলাম, এ বছর ব্যবসা হবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত অবস্থা ভালো না।
কোতোয়ালী মোড়ের সেলিম উদ্দিন নামের ভ্রাম্যমাণ নোট বিক্রেতা জানান, খোলা বাজারে ১০০ টাকা, ৫০ টাকা, ২০ টাকা, ১০ টাকার নতুন নোট পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি ২০০ টাকার স্মারক ব্যাংক নোটও পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে ৫ টাকার একশটি নতুন নোট বিক্রি করছি ৬৫০-৭০০ টাকায়। এছাড়া ১০ টাকার নোট একশটি ১০ হাজার ১০০ থেকে ২০০ টাকায়, ২০ টাকার একশটি নোট ২ হাজার ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় এবং ৫০ ও ১০০ বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৫ হাজার ২০০ থেকে ২৫০ এবং ১০ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে গত বছরের মতো এ বছরও বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নোট বিতরণ বন্ধ রাখায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বরাবরের মতো তফসিলি ব্যাংকগুলোতে বিতরণ সুযোগ দিলেও সেখানে সাধারণ মানুষের পক্ষে নতুন নোট নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফজলুল আমিন নামের এক ব্যক্তি জানান, ঈদ উপলক্ষে কিছু নতুন টাকা নিতে একটি বেসরকারি ব্যাংক গিয়েছিলাম, তারা সরাসরি টাকা নাই বলে দিল। একজন ব্যাংক কর্মকর্তা অবশ্য বললেন, এই টাকা কেবল তাদের গ্রাহকদের জন্যই তারা এনেছেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চট্টগ্রাম জোনাল ম্যানেজার জসিম উদ্দিন বাবুল দৈনিক আজাদীকে বলেন, নতুন টাকার চাহিদা আছে। কিন্তু সেই চাহিদা অনুযায়ী আমাদের নতুন টাকা সরবরাহ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক সপ্তাহের মধ্যে আসছে ৫ লাখ চীনা টিকা
পরবর্তী নিবন্ধনালার পানি নিষ্কাশন বন্ধ দুর্ভোগে লাখো মানুষ