নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আবার পেছাল

৫ জুনের আগে হচ্ছে না, উপজেলা নির্বাচনের সময় সব কার্যক্রম বন্ধ

শুকলাল দাশ | রবিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের আগে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে না। চার ধাপের উপজেলা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে আওয়ামী লীগ সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে সব রকম সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন ও কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে এবং সর্বশেষ ৪র্থ ধাপের নির্বাচন হবে ৫ জুন। গত ৩১ মার্চ ঢাকায় চট্টগ্রাম বিভাগের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ দলীয় এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সাথে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতবিনিময় সভায় ওবায়দুল কাদের মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, সম্মেলন করে সেখানে (চট্টগ্রামে) কমিটি গঠন করা হবে। ঢাকা থেকে প্রেস রিলিজ দিয়ে কেন কমিটি গঠন করতে হবে? এ সময় তিনি সংগঠনের তৎপরতা জোরদার করা এবং নিজেদের মধ্যে দূরত্ব নিরসনেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন।

৩১ মার্চের বৈঠকে সম্মেলনের নির্দেশনা আসার পর থেকে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিল। দেড় দশ পর সম্মেলন হবে, প্রায় ১১ বছর পর নতুন কমিটি হবেএই আশায় নতুন নেতৃত্বে আসার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষার প্রহর গুনছেন প্রথম সারির প্রায় ২৫ জন সাবেক ছাত্রনেতা। তবে বয়সের কারণে এবার বর্তমান কমিটির অনেকের স্থান হতে পারে উপদেষ্টা কমিটিতে। দলের জন্য বছরের পর বছর জেল, হামলামামলার শিকার হয়েছিলেন, বয়সের কারণে বর্তমান কমিটির এ রকম ৯/১০ জনকে যেতে হবে উপদেষ্টা কমিটিতে। স্থান করে দিতে তরুণদের। নতুন কমিটিতে আসার জন্য এক দশকেরও বেশি সময় অপেক্ষা করছেন প্রথম সারির এক ঝাঁক ছাত্রনেতা। এদের অনেকে নগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে শীর্ষ পদ থেকে সম্পাদকীয় ও নির্বাহী সদস্য পদে আসতে পারেন। আবার নিষ্ক্রিয়তার কারণে বর্তমান কমিটির বেশ কয়েকজন পদ হারাতে পারেন।

সম্মেলনের দেড় দশক : প্রতি তিন বছরে একবার করে সম্মেলন হওয়ার নিয়ম থাকলেও গত দেড় দশকেও অনুষ্ঠিত হয়নি নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। গত বছর চার দফা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করার পরও নগর রাজনীতির গ্রুপিংয়ের কারণে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। কেন্দ্র থেকে স্থগিত করা হয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ৩১ জুলাই চতুর্থবারের মতো নগরীর কিং অব চিটাগাং কনভেশন হলে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। কিন্তু তার কয়েকদিন আগে কেন্দ্র থেকে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনসহ সকল থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট সম্মেলন স্থগিত করা হয়। নগরের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে। এর মধ্যে উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কমিটিও হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি।

নগর কমিটির ১১ বছর : নগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটি হয়েছে ১১ বছর হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিনবারের মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটি গঠিত হয় ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর। তবে সেবার সম্মেলন হয়নি, কমিটির ঘোষণা এসেছিল ঢাকা থেকে। তার আগে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালে।

২০১৭ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরী মৃত্যুর পর কমিটির সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী পান ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব। গত বছর তিনি ভারমুক্ত হয়ে পূর্ণ সভাপতি হন। কিন্তু সম্মেলন আর হয়নি। ২০২২ সালে ১ অক্টোবর, ৪ ডিসেম্বর ও ১৮ ডিসেম্বর এবং সর্বশেষ গত বছরের ৩১ জুলাই চার দফায় নগর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করলেও তা হয়নি। চট্টগ্রাম নগরে আওয়ামী লীগের ১৩২টি ইউনিট, ৪৪ ওয়ার্ড এবং ১৫টি থানা।

.

পূর্ববর্তী নিবন্ধআইন করে রোগ নির্ণয় পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধমামলার দু’বছর আগের মৃত ব্যক্তিকে রেখে পিবিআই কর্মকর্তার প্রতিবেদন