সরল বিশ্বাসে কেউ দুইবার ভোটার হলে মাফ করে দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে উদ্দেশ্য অসৎ হলে মামলা হবে। বিষয়টি যাচাই করবে উপজেলা নির্বাহী কমিটির নেতৃত্বে গঠিত কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে দ্বৈত ভোটারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং বিকল্পভাবে নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কমিটি করে শুনানি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অশোক কুমার বলেন, অনেকে না বুঝে সরল বিশ্বাসে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন। আবার অনেকে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন। এজন্য মাঠ প্রশাসন থেকে কমিশন বিষয়টি যাচাই-বাছাই করবেন। এ ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি দ্বৈত ভোটারের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করবে। সরল বিশ্বাসে কেউ দ্বৈত ভোটার হলে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে। আর অসৎ উদ্দেশ্যে কেউ ভোটার হলে ওই কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। খবর বাংলানিউজের।
দেশে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর থেকে প্রায় ৬ লাখের মতো নাগরিক দুইবার ভোটার হয়েছেন। আরও ৬ লাখের মতো নাগরিক দুইবার ভোটার হওয়ার চেষ্টা করেছেন। ৭৮তম কমিশন বৈঠকে রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্যপদ পূরণের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, আজকের বৈঠকে রাজনৈতিক দলের শর্তপূরণের বিষয়টি এজেন্ডায় ছিল। এ বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেয়ার। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের শর্ত অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে সকল রাজনৈতিক দলের নারী নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য পদ নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা ছিল। এ ক্ষেত্রে দলগুলোর সর্বশেষ কী স্ট্যাটাস কমিশন দলগুলোকে চিঠি দিয়ে তার তথ্য নেবে।
এর আগেও বেশ কয়েকবার দলগুলো নারী সদস্য পদ পূরণের জন্য চিঠি দিয়েছিল। কোনো দলই নিবন্ধনের এ শর্তটি পূরণ করতে পারেনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আরও পাঁচ বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আলাদা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে দলগুলোকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ আরও ১০ বছর সময় দেওয়ার বিধান আনতে চাচ্ছে। এক-এগার সরকারের সময় দেশে প্রথমবারের মতো নির্বাচনমুখী দলগুলোর জন্য নিবন্ধন দেওয়ার উদ্যোগ নেয় কমিশন। সে সময় নিবন্ধনপ্রাপ্ত দলগুলোকে সকল পর্যায়ের কমিটিতে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য পদ পূরণে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছিল। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯টি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠটি নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে বিকেল ৩টা থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এতে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সকল নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় ইসি।