সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে সেচ

খাগড়াছড়িতে বিনামূল্যে সুবিধা পাচ্ছে ৬শ পরিবার

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২ এপ্রিল, ২০২১ at ৪:১২ পূর্বাহ্ণ

এতদিন সোলার শক্তিতে আলোকিত হতো মানুষ। এখন তা ব্যবহৃত হচ্ছে কৃষিতেও। সৌর শক্তিচালিত পাম্পের মাধ্যমে সেচ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ৯ উপজেলায় ১১০০ হেক্টর কৃষি জমি। এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেচ সুবিধা পাচ্ছে জেলার ৬০০ কৃষক পরিবার।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, ‘চলতি আমন মৌসুমে প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। কিন্তু বোরো মৌসুমে চাষ হচ্ছে কেবল ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। সেচ সুবিধা না থাকায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো মৌসুমে আবাদ বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েন কৃষকরা। জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দীঘিনালার কৃষকরা। দীঘিনালায় বোরো মৌসুমে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার চাষযোগ্য জমির প্রায় অর্ধেকটাই খালি পড়ে থাকে সেচের অভাবে। আবার কিছু অংশে এক বা দুবার চাষ করা সম্ভব হলেও তিনবার চাষ করা যায় না। যেখানে সমতলের কৃষি জমিতে সেচ সুবিধা দেয়াই দুরূহ হয়ে পড়ে; সেখানে পাহাড়ে চাষকৃত বিভিন্ন ফল বাগানে পানি পৌঁছানো আরো কঠিন হয়ে যায়। এ অবস্থায় এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। প্রতিষ্ঠানটি পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে সৌর শক্তির মাধ্যমে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে খাগড়াছড়িতে ভূ-উপরস্থ পানির মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ কর্মসূচিতে উপকার পাচ্ছেন বহু পাহাড়ি-বাঙালি কৃষক। এখন সেচের জন্য একটি টাকাও খরচ করতে হচ্ছে না তাদের।
উপকারভোগী কৃষকরা জানান, ‘একসময় সেচের অভাবে জমি অনাবদী পড়ে থাকত। এক মৌসুম উৎপাদন করতে পারতাম। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে সেচ দিতে পারছি। উৎপাদনও হচ্ছে।’ বিনামূল্যের সেচ সুবিধা পেয়ে খুশি কৃষকরা চান এই সুবিধা যেন আরো ছড়িয়ে পড়ে।
খাগড়াছড়ি সদর ও পানছড়িতে এমন দুটি সেচ প্রকল্প আশা জাগিয়েছে কৃষকদের। জেলার ৯ উপজেলায় এ ধরনের অন্তত ২০টি ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পের মাধ্যমে শূন্য দশমিক ২৫ কিউসেক ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্পের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে ৭ লিটার পানি উত্তোলন করা সম্ভব। সৌর বিদ্যুতের একেকটি প্যানেল ২৪শ ওয়াট ক্ষমতার। বিএনডিসির এই কর্মসূচি দিয়ে সমতলের ধান, শাক-সবজি, আখ ছাড়াও পাহাড়ের ওপরের আম-মাল্টা প্রভৃতি ফল বাগানে সেচ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপকারভোগী কৃষকদের ম্যানেজার সুইসাপ্রু মারমা। খাগড়াছড়ি বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান সৌর শক্তি ব্যবহার করে কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে আরো বেশ কয়েকটি উদ্যোগ হাতে নেয়া হবে বলে জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধদ্বৈত ভোটার উদ্দেশ্য সৎ হলে মাফ অসৎ হলে মামলা