চলতি অর্থবছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশে বেকার শ্রমশক্তির হার ‘কিছুটা’ বেড়ে ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশে দাঁড়ানোর তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
গতকাল রোববার প্রকাশিত সংস্থাটির ‘ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ’ বলছে, ২০২৩ সালের একই প্রান্তিকে দেশে বেকার শ্রমশক্তির হার ছিল ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। সেই হিসাবে বেকার শ্রমশক্তি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ পয়েন্ট। বিবিএসের হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বেকার মানুষের সংখ্যা ছিল ২৬ লাখ ৬০ হাজার। একবছর আগে যা ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। অর্থাৎ এক বছরে দেশে বেকার বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার। খবর বিডিনিউজের।
বেকারত্ব ও জনশক্তির হিসাব এতদিন ১৩তম আইসিএলএস (পরিসংখ্যানবিদদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন) অনুযায়ী তৈরি করত বিবিএস। এবারই প্রথম সেটি করা হয় ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী। এ দুই পদ্ধতিতে কর্মে নিয়োজিত বিবেচনার ভিন্নতা থাকায় বেকারত্বের সংখ্যায়ও তারতম্য ঘটে।
১৩তম আইসিএলএস অনুযায়ী, কেউ যদি সবশেষ ৭ দিন কমপক্ষে ১ ঘণ্টা বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে অথবা খানার নিজস্ব ভোগের জন্য উৎপাদনমূলক কাজ করে, তাকে কর্মে নিয়োজিত বলে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে যারা বিগত ৭ দিন সময়ে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কাজ করেছে তারাই ১৯তম গাইডলাইন অনুযায়ী কর্মে নিযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ নিজস্ব ভোগের পণ্য উৎপাদনকে এক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় না।
জরিপে দেখা যায়, নতুন হিসেবে দেশের শ্রমশক্তিতে নিযুক্ত রয়েছেন ৫ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার মানুষ। এরমধ্যে ২৬ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বেকার ছিলেন, যা শতকরা হিসাবে ৪ দশমিক ৪৯ ভাগ।
২০২৩ সালের একই প্রান্তিকে শ্রমশক্তি ছিল বেশি; বেকারত্বও ছিল কম। সে সময়ে শ্রমশক্তি ছিল ৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬০ হাজার; এর মধ্যে বেকার ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার মানুষ (৪ দশমিক ০৭ শতাংশ)। নতুন হিসাবের সঙ্গে বিবিএস পুরনো পদ্ধতিতেও বেকারত্বের হিসাব দিয়েছে। তাতে দেখা যায়, জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৫০ হাজার আর কর্মে নিয়োজিত ছিল ৬ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার।
যারা কর্মে নিয়োজিত নয়, আবার বেকার হিসেবেও বিবেচিত নয়, তাদেরকে শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী ধরা হয়। এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার্থী, অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মে নিয়োজিত নন বা নিয়োজিত হতে অনিচ্ছুক এমন গৃহিণী রয়েছেন। জরিপ অনুযায়ী ২০২৪ এর জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশে এই জনগোষ্ঠীতে ৫ কোটি ১৪ লাখ ৪০ হাজার নারী–পুরুষ ছিলেন।