দেশে ফিরতে চাই

ইউক্রেনে আটকে পড়া জাহাজের নাবিকের আকুতি

| বুধবার , ২ মার্চ, ২০২২ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

ইউক্রেনের বন্দরে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধির’ একজন নাবিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে বিবিসি বাংলা। তিনি দেশে ফেরার তীব্র আকুতির কথা জানিয়েছেন। আতিকুর রহমান মুন্না বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির ২৯ জন নাবিকের একজন। মোবাইল সংযোগ কাজ করছে, তবে ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত। মুন্না দুশ্চিন্তায় আছেন। কারণ তিনি জানেন না কবে এই আটকে পড়া দশা থেকে মুক্তি পাবেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত থাকায় বহির্বিশ্বের খবর খুব একটা পাচ্ছেন না। যুদ্ধের খবর কম পাচ্ছেন। তবে আশপাশে যুদ্ধবিমান উড়তে দেখেছেন। যেদিন যুদ্ধ বেঁধেছে, সেদিন আকাশ থেকে বোমা ফেলতে দেখেছেন। যে বন্দরে আটকা পড়েছেন সেই ওলভিয়ার আশপাশে রবিবার তারা অনেক বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছেন। এসব কারণে তাদের সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। জাহাজের ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে মাঝে মাঝে বাংলাদেশে পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন মুন্না। তিনি জানান, শিপিং কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকেও ক্যাপ্টেনের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে এই অবস্থা থেকে মুক্ত হবেন তা এখনও জানেন না।
তিনি বলেন, জাহাজে যে খাবার মজুদ আছে তা দিয়ে সব ক্রুর ৪০ দিন পর্যন্ত টিকে থাকা সম্ভব হবে। খাবার পানি আছে প্রায় ১০০ টনের বেশি। তাই আপাতত খাবার ও পানি নিয়ে চিন্তা করছেন না। যত দুশ্চিন্তা দেশে ফেরা নিয়ে।
২৬ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই বন্দর থেকে যাত্রা করে তুরস্কের ইরেগলি হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। জাহাজটি বন্দরে পৌঁছানোর পরদিন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়। জাহাজটি ইউক্রেন থেকে সিরামিক ক্লে নিয়ে ইতালির রেভেনা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক পীযূষ দত্ত বলেন, সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জাহাজ ও এর নাবিকেরা নিরাপদ আছেন। তিনি বলেন, জাহাজটি ২৩ ফেব্রুয়ারি ওলভিয়া বন্দর ছেড়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে যুদ্ধাবস্থা শুরু হয়। তখন আমরা জাহাজটিকে কোনো পণ্য না নিয়ে বন্দর ছেড়ে চলে আসতে বলি। যেখানে জাহাজটি নোঙর করেছে সেখান থেকে মূল সাগরে আসতে অন্তত ৬০ নটিক্যাল মাইল পথ অতিক্রম করতে হবে। স্থানীয় পাইলট ছাড়া সেটি করা সম্ভব নয়। যুদ্ধাবস্থার কারণে স্থানীয় পাইলট পাওয়া যায়নি।
রাশিয়া ও ইউক্রেন কৃষ্ণসাগরের উপকূলে অবস্থিত। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার জল, স্থল ও আকাশপথে সামরিক অভিযানের কারণে কৃষ্ণসাগর দিয়ে জাহাজ চলাচলে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিএসসির কর্মকর্তারা বলছেন, ওলভিয়া বন্দরের কাছে এই মুহূর্তে আরো ১৩টি জাহাজ আটকে আছে।
বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক রয়েছেন। এর মধ্যে দুজন নারী ক্যাডেট। ২৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছেন নাবিকেরা। এরপর সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে শিপিং কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় ভোটের দিন গোলাগুলিসহ হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধশিল্পপতি নাসির উদ্দিনের মরদেহ চট্টগ্রামে আসছে আজ