দুবাই পাচারের জন্য শ্যালিকাকে ঢাকা থেকে অপহরণ, চট্টগ্রামে উদ্ধার

পাচারকারী দলের তিনজন গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

দুবাই প্রবাসী শহিদুল করিম সম্প্রতি ঢাকায় এক নারীকে বিয়ে করেছেন। বিয়ের আগে শ্বশুরপক্ষ জানত দুবাই শহরে তিনি ব্যবসা করেন। বিয়ের কিছুদিন পর নববধূকে দুবাই নিয়ে যাওয়ার সময়ও মেয়ের পরিবারের কেউ আপত্তি করেনি; বরং খুশিই হয়েছিল। যখন জানতে পারে যে, স্ত্রীকে দুবাই নিয়ে সেখানের নাইট ক্লাবে বিক্রি করে অন্য দেশে থাকতে শুরু করেছেন শহিদুল; মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাদের। জানতে পারে, এটাই তার ‘ব্যবসা’; তাদের মেয়ের জামাই নারী পাচারকারী দলের প্রবাসী সদস্য!

শহিদুল করিম এখানেই থেমে না থেকে টার্গেট করেন শ্যালিকাকে। কৌশলে অপহরণ করেন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরীকে। অপহরণের পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এনে রাখা হয় চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত র‌্যাবের অভিযানে পাচারের হাত থেকে বেঁচে যায় ওই কিশোরী। ঢাকার শাহ আলী থানার একটি মামলায় শনিবার ওই কিশোরীকে উদ্ধার এবং তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন, আবু সুফিয়ান রানা (৩১), তার স্ত্রী শারমিন কাউসার (২২) ও মো. নুরুজ্জামান (৫৫)

গতকাল রোববার বিকেলে র‌্যাব৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, গত ৩ জানুয়ারি সকাল ৯টায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে শহিদুল তার সহযোগী সাকিব ও নুরুজ্জামানের সহায়তায় ওই কিশোরীকে অপহরণ করেন। এই ঘটনায় ভিকটিমের মা তিনজনকে আসামি করে ঢাকার শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে র‌্যাব। এক পর্যায়ে অপহরণের ঘটনায় জড়িত দুজনের অবস্থান চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানা এলাকায় শনাক্ত হয়। মামলার সূত্র ধরে শনিবার রাত ২টায় হালিশহর থানার চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে আবু সুফিয়ান ও শারমিন কাওসার হান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে, রোববার ভোরে হাটহাজারী উপজেলার ছিপাতলী এলাকা থেকে আরেক আসামি নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। নুরুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, ওই কিশোরীকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আনার পর ১৬ দিন সুফিয়ান ও শারমিন দম্পতির কাছে রাখা হয়েছিল। পরে নুরুজ্জামান তাকে সাতকানিয়ায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে দুবাই নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এই পাচার চক্রটি অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যদের সহায়তায় অসহায় মেয়েদের বিভিন্নভাবে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুবাইয়ে পাচার করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদোহাজারী-চট্টগ্রাম রেল লাইন পরিদর্শনে জিআইবিআর
পরবর্তী নিবন্ধমাতারবাড়ি থেকে চালু হবে প্রথম ফিডার সার্ভিস