দিপু-রিপনের টর্নেডোর পর শোয়েবের ঘূর্ণি প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর টানা তৃতীয় জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ

প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। ব্যাট হাতে শাহাদাত হোসেন দিপু এবং সাজ্জাদুল হক রিপনের টর্নেডোর পর স্পিনার শোয়েবের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র লাল। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধাকে ১২৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে আবাহনী। এই নিয়ে লিগে আবাহনীর তিনে তিন জয়। শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েই এবারেও দল গড়েছে আবাহনী। আর সে লক্ষ্যে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। প্রতিপক্ষকে কোন সুযোগ না দিয়ে একেবারে ফেভারিটের মত জয়রথ সচল রেখেছে। গতকালের ম্যাচে দারুন এক সেঞ্চুরি করেছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য শাহাদাত হোসেন দিপু। তবে আবাহনীকে রানের পাহাড়ে তোলার পথে সবচাইতে বড় ভূমিকা রেখেছেন দলের অধিনায়ক সাজ্জাদুল হক রিপন। মাত্র ১৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়া রিপনের ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ৬০ রান। অথচ টসে জিতে ব্যাট করতে নামা আবাহনীর শুরুটা ভালো হয়নি মোটেও। ১৩ রানে দুই ওপেনারকে হারায় আবাহনী।

ঠিক তখন থেকেই দলের হাল ধরেন দিপু। যদিও শুরুতেই ক্যাচ দিয়েছিলেন দিপু। কিন্তু সেটা রাখতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধার ফিল্ডার। আর সে সুযোগটাকে বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন দিপু। যদিও অপর প্রান্তে তাকে তেমন সঙ্গ দিতে পারছিল না। এরই মধ্যে ১৯ রান করে শোয়েব এবং ৩৮ রান করে ফিরেন জহুরুল ইসলাম অমি। ২৪ রান করে ফিরেন জীবন। ৪৫.৪ ওভারে আবাহনীর রান যখন ৭ উইকেটে ২০৯ তখন ব্যাট হাতে নামেন রিপন। এরপর শুরু হয় তার ব্যাটিং তান্ডব। মুক্তিযোদ্ধার বোলারদের কচুকাটা করলেন রিপন। শেষ ২৬ বলে দিপু এবং রিপন মিলে যোগ করেন ৭৬ রান। যেখানে শুধু রিপনের অবদান ২১ বলে ৬০ রান। মাত্র ১৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েছেন রিপন। মেরেছেন ৩টি চার এবং ৬টি ছক্কা। অপরদিকে দলকে টেনে নেওয়া দিপু অপরাজিত ছিলেন ১৩৪ বলে ১১৩ রান করে। মেরেছেন ৯টি চার এবং দুইটি ছক্কা। মূলত এই দুজনের ব্যাটিং তান্ডবে আবাহনীর ইনিংস গিয়ে দাঁড়ায় ২৮৫ রানে। মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে ২ টি করে উইকেট নিয়েছেন রাশেদুল বারী, রাজিবুল এবং বাপ্পা।

২৮৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা যেভাবে করা উচিত ঠিক সেভাবে করতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধার দুই ওপেনার। ৩৫ রানে ভাঙ্গে তাদের ওপেনিং জুটি। ১৩ রান করা ইমনকে ফেরান রিপন। তবে আরেক ওপেনার জসিম উদ্দিন চেষ্টা করছিলেন দলকে টেনে নিতে। তবে তার আগে ফিরেন অধিনায়ক বাপ্পা। তাকে ফেরান সোহেল। এরপর শুরু হয় শোয়েবের ঘুর্ণি জাদু। ওপেনার জসিমকে দিয়ে শুরু করেন শোয়েব। এরপর তার ঘূর্ণির সামনে দাঁড়াতে পারেনি কেউই। ৩১ বলে ৪১ রান করে ফিরেন জসিম। এরপর কেবলই আসা যাওয়া করেছে মুক্তিযোদ্ধার ব্যাটাররা। জাওয়াদের ৩৭ এবং মুরাদের ২৭ রান ছাড়া দুই অংকের ঘরে যেতে পেরেছে কেবল ১৪ রান করা ফখরুদ্দিন।

মূলত জসিম আউট হওয়ার পরেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় মুক্তিযোদ্ধা। যদিও একজন শোয়েব তাদের ছিটকে দিয়েছে বললে মোটেও বাড়িয়ে বলা হবে না। শেষ পর্যন্ত ১০.৫ ওভার বাকি থাকতে ১৬২ রানে অল আউট হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। আবাহনীর পক্ষে ৮.১ ওভার বল করে। মাত্র ২১ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছেন শোয়েব। বাকি ছয় বোলারের পাঁচ জনই নিয়েছেন একটি করে উইকেট। টানা তিন ম্যাচে জিতে পয়েন্ট তালিকার সবার উপরে এখন চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। প্রিমিয়ার লিগে আজকের খেলায় অংশ নেবে পাইরেটস অব চিটাগাং এবং সিটি কর্পোরেশন একাদশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোয়ালিকুল তরুণ সংঘের অলিম্পিক ফুটবল টুর্নামেন্ট সম্পন্ন
পরবর্তী নিবন্ধআবারো হারলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স