দালাল ও চোর চক্র নিয়ন্ত্রণে তৎপর প্রশাসন

চমেক হাসপাতালে দ্বিগুণ হচ্ছে সিসিটিভি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

হাসপাতাল এলাকায় সার্বিক শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি দালাল ও চোর চক্র নিয়ন্ত্রণে নড়েচড়ে বসছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল প্রশাসন। এ নিয়ে এখন বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তৎপরতার অংশ হিসেবে হাসপাতালের ভিতরে-বাইরেসহ চারপাশে স্থাপন করা সিসিটিভির সংখ্যা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে দালাল ও চোর চক্র নিয়ন্ত্রণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। এর আগে দর্শনার্থীদের প্রবেশে ফের পাস চালুর পরিকল্পনার কথাও জানায় হাসপাতাল প্রশাসন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ভিতরে-বাইরেসহ হাসপাতালের চারপাশে সব মিলিয়ে আড়াই শতাধিক (২৫৮টি) সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা আছে। এ সংখ্যা এখন দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক আজাদীকে বলেন, বর্তমানে আড়াই শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এরপরও বহিরাগত বিভিন্ন লোকজনের (দালাল) আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। চুরির ঘটনাও ঘটছে। তাই হাসপাতালের কোন কোন পয়েন্ট এখনো সিসিটিভি ক্যামেরার বাইরে সেটি আমরা দেখছি। পাশাপাশি কোন কোন পয়েন্টে নতুন করে সিসিটিভি লাগানো প্রয়োজন, সেটিও দেখা হচ্ছে। অর্থাৎ আমরা কোন পয়েন্ট বাদ রাখতে চাচ্ছি না। সবটাই সিসিটিভির আওতায় আনার কথা ভাবছি। হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই নতুন করে আরো সিসিটিভি স্থাপনের কাজ শুরু করতে পারবো।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাইনি ওয়ার্ডসহ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দালালের উৎপাত চরম পর্যায়ে। রোগীর স্বজনরা কখন ওষুধের স্লিপ নিয়ে বের হচ্ছেন, এর জন্য ওঁৎপেতে থাকেন দালালরা। ওষুধের স্লিপসহ কাউকে পেলেই তাকে টেনে নিয়ে যান। কম দামে ও প্রয়োজনে বাকিতে ওষুধ কিনে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নির্ধারিত ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ফার্মেসিগুলোর সাথে আগে থেকেই চুক্তি থাকে এসব দালালের। বলতে গেলে নির্দিষ্ট কিছু ফার্মেসির হয়েই কাজ করে এসব দালাল। নির্ধারিত ফার্মেসিতে আনার পর কয়েক গুণ বেশি দামেই ধরিয়ে দেয়া হয় ওষুধ। এ কাজে একটি নির্দিষ্ট হারে কমিশন পায় দালালরা। যা ফার্মেসিগুলো থেকেই দেয়া হয়। এভাবেই দালালদের হাতে নিঃস্ব হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নিম্নবিত্ত ও অসহায় রোগীর অসংখ্য পরিবার। কিন্তু ওয়ার্ডের ভিতরে-বাইরে বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এ ধরনের উৎপাত অনকেটাই কমানো সম্ভব বলে মনে করেন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা। এতে করে রোগীর অসহায় স্বজনরাও দালালের খপ্পর থেকে রেহাই পেতেন। এর বাইরে হাসপাতালের ভিতর থেকে বিভিন্ন সময় নবজাতক চুরির ঘটনাও ঘটেছে। ওষুধ চুরি তো অনেকটা নিত্যকার ঘটনা। কয়েকদিন আগেও সরকারি ওষুধ চুরির ঘটনায় দুজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। এর মাঝে একজন হাসপাতালেরই সরকারি কর্মচারী। দালালের পাশাপাশি এ ধরনের বিভিন্ন চোর চক্র সক্রিয় রয়েছে হাসপাতালে। এদের নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন।
এর অংশ হিসেবে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা দ্বিগুন করা হচ্ছে। একই সাথে দর্শনার্থী প্রবেশেও নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে দর্শনার্র্থী প্রবেশে ফের পাস চালুর পরিকল্পনাও নিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন। হাসপাতালের সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি বহিরাগত, দালাল ও চোর চক্র নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নতুন করে এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেরত চান আমানতের শত কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শনাক্তের হার ৯.৪৭ শতাংশ