তিন পার্বত্য জেলার ঝর্ণা ছড়া ও ঝিরি সুরক্ষা বিষয়ে কর্মশালা

কাপ্তাই প্রতিনিধি | রবিবার , ৪ জুন, ২০২৩ at ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি এই তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ের পাদদেশে আনাচে কানাচে ঝোপ ঝাড় জঙ্গল দিয়ে প্রবাহিত পাহাড়ি ঝর্ণা, ছড়া এবং ঝিরিগুলো সমগ্র পার্বত্য জেলার পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে বিগত ১০০ বছর আগে তিন পার্বত্য জেলায় দুই লক্ষ ঝর্ণা, ছড়া এবং ঝিরির প্রবাহ ছিল। এসব ঝর্ণা, ছড়া এবং ঝিরি দিয়ে পানির ধারা বহমান থাকতো এবং মানুষ, পশু পাখি ও জীব জন্তু এই পানির ধারা থেকে তৃষ্ণা মিটাত। বিপুল সংখ্যক ঝর্ণা, ছড়া এবং ঝিরি থাকার ফলে শত বছর পূর্বে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে ছিল হরেক রকম গাছপালা জন্তু জানোয়ার। কিন্তু বর্তমানে এসব ঝর্ণা, ছড়া এবং ঝিরির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। ঝর্ণা, ছড়া এবং ঝিরি কমে যাওয়ায় সরকার এগুলোকে রক্ষা করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পানির উৎস সমুহ চিহ্নিত ও পুনরুজ্জীবিত করণের মাধ্যমে টেকসই পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা এবং সমীক্ষা প্রতিবেদন বিষয়ক অবহিতকরণ সভা গতকাল শনিবার কাপ্তাই উপজেলার কিন্নরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইসি) এই কর্মশালার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দীন। সভাপতিত্ব করেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমন দে। শুরুতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিইজিআইএস এর প্রকৌশলী মো. শাকিল আহমেদ। তাকে সহযোগিতা করেন সিইজিআইএস এর ফয়সাল আহমেদ। প্রতিবেদনে বলা হয় ঝর্ণা, ছড়া ও ঝিরি না থাকলে পার্বত্য এলাকায় মানুষ, পশু পাখি এবং জীব জন্তুর বসবাস কঠিন হয়ে পড়বে। পার্বত্য এলাকার অধিকাংশ ঝর্ণা, ছড়া ও ঝিরি শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক গুলো মরে গেছে। অনেক গুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমান যেসব ছড়া অবশিষ্ট আছে সেগুলোর মধ্যে কিছু আছে বারোমাসি এবং অনেক গুলো আছে মৌসুমী ছড়া। বারোমাসী ছড়ায় সবসময় কমবেশি পানির ধারা প্রবাহিত থাকলেও মৌসুমী ছড়ায় বিশেষ বিশেষ সময় পানির দেখা মিলে। পার্বত্য এলাকার সবগুলো ছড়াকে বারোমাসি ছড়ায় পরিণত করতে পার্বত্য এলাকা থেকে নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করা, অধিক হারে বাঁশের ঝোপ রোপন, ছড়া থেকে পাথর উত্তেলান বন্ধ করা, পাহাড়ি ঝিরির ৪০ ফুট এলাকার মধ্যে কোন ধরণের চাষাবাদ না করা, পরিকল্পিত বনায়ন করাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পর্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের কাপ্তাই উপজেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক মৃদুল চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক হাজারী, কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান আহমেদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রুহুল আমিন, চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ, আক্তার হোসেন মিলন, মংক্য মারমা, ওয়েশ্লিমং চৌধুরী, চিরনজিত তনচংগ্যা, কাজী মোশাররফ হোসেন, ঝুলন দত্ত প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ব্যবসা বিকাশে ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম
পরবর্তী নিবন্ধনুরুদ্দিন কার্ডিয়াক সেন্টারের ক্যাথল্যাব উদ্বোধন