তাদের ফণা তুলতে দেওয়া যাবে না : তথ্যমন্ত্রী

| মঙ্গলবার , ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ at ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

মৌলবাদীরা বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে বসে আছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলছেন, কোনোভাবেই এদের ফণা তুলতে দেওয়া যাবে না। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরাম’ এর সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে মৌলবাদী গোষ্ঠী বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে বসে আছে। সময়ে সময়ে তারা ফণা তোলার চেষ্টা করে, এদেরকে কোনোভাবেই ফণা তুলতে দেওয়া যাবে না। যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর আঘাত হেনেছে, যারা ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে, এরা তাদেরই অনুসারী। যারা ফতোয়া দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা সব কাফের, নারীরা হচ্ছে গণিমতের মাল, তাদের ভোগ করা যাবে- এই ফতোয়া যারা দিয়েছিল তাদের অনুসারী হল আজকে যারা ভাস্কর্য নিয়ে ফতোয়া দেয়। খবর বিডিনিউজের।
হাছান বলেন, তারা যে ফতোয়া দেয়, সে অনুযায়ী তাদের ছবিওতো রাখার নিয়ম নেই, ছবি তুলতে পারবে না। তাদের বাবা মা’র ছবিও রাখতে পারবে না। সেটাতো তারা বর্জন করছেন না। মূল কথা হচ্ছে, এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, মৌলবাদী অপশক্তি ঘাপটি মেরে বসে থেকে সময় সময়, ফণা তোলার চেষ্টা করে। এই অপশক্তিকে পরাভূত করে বাংলাদেশ রচিত হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে মৌলবাদী অপশক্তির কোনো স্থান হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।
হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল সম্প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতায় সরব হয়েছে। কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যে ভাঙচুরও চালানো হয়েছে গত শুক্রবার রাতে। সেই প্রসঙ্গ ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই মৌলবাদী গোষ্ঠী দেশকে মধ্যযুগে নিয়ে যেতে চায়। তারা এ ধরনের ফণা তোলার অপচেষ্টা করতে পারত না যদি তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা না করা হত।
তাদেরকে একটি দল একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। অথচ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেই দলের প্রতিষ্ঠাতারও ভাস্কর্য আছে। সেজন্য তারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। তারা যদি এ পৃষ্ঠপোষকতা না পেত, তাহলে তাদের পক্ষে মাঝেমধ্যে এরকম ফণা তোলার অপচেষ্টা করা সম্ভবপর হত না।
দেশে গণতন্ত্র নির্বাসিত বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে মন্তব্য করেছেন, তারও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান। তিনি বলেন, যারা অতীতে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল, যাদের জন্ম অগণতান্ত্রিকভাবে সেনা ছাউনিতে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তারা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, তখন গণতন্ত্রমনা মানুষ ও দেশের মানুষ হাসে।
আর মির্জা ফখরুল ইসলাম তাদের একজন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছে। আর যে সমস্ত রাজনীতিবিদ সে সময় ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট নিতে সমবেত হয়েছিল, আমি যথেষ্ট সম্মান রেখে বলছি, তাদের মধ্যে একজন হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব। তারা হচ্ছেন দলছুট, রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া রাজনীতিবিদ। তারা যখন গণতন্ত্রের কথা বলেন, তখন মানুষের মুখে হাসি পায়। প্রকৃতপক্ষে বিএনপিতে কোনো গণতন্ত্র নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক মেসেজেই স্বপ্নপূরণ
পরবর্তী নিবন্ধএকাত্তরের পরাজিত অপশক্তির আস্ফালন ঠেকাতে হবে