টানা তৃতীয় জয়ে দারুণভাবে ফিরল কুমিল্লা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ২০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

এবারের বিপিএলের শুরু থেকেই একেবারে হতশ্রী চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ঢাকা টানা তিন ম্যাচে হার। সে অবস্থায় আসে চট্টগ্রামে। আর চট্টগ্রামে এসেই যেন আমূল বদলে গেল চ্যাম্পিয়ন্সরা। প্রথম তিন ম্যাচে হারা কুমিল্লা চট্টগ্রামে এসে তুলে নিল টানা তিন জয়। স্বাগতিক চট্টগ্রামকে দিয়ে শুরু এরপর অজেয় থাকা সিলেটকে দিল প্রথম হারের স্বাদ। আর গতকাল ধুকতে থাকা ঢাকাকে হারিয়ে টানা তিন জয় তুলে নিয়ে এখন পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে গেছে চ্যাম্পিয়নরা। ৬ ম্যাচে কুমিল্লার সংগ্রহ এখন ৬ পয়েন্ট। সবার উপরে ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট সিলেট। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পাওয়া সাকিবের বরিশাল। গতকাল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকা ডমিনেটরসকে ৩৩ রানে হারিয়েছে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আর এটি ঢাকার ৫ ম্যাচে চতুর্থ পরাজয়। ২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সবার নিচে নাসির হোসেনের দল। খুশদিল শাহ এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং কুমিল্লাকে পাইয়ে দিয়েছে দারুণ এই জয়। অপরদিকে এই পরাজয়ের পেছনে ঢাকার বোলারদের নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং এবং ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বহীন ব্যাটিং সবচাইতে বেশি দায়ী। পাঁচ ম্যাচে হারা ঢাকার এখন আর নক আউটে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

টসে হেরে ব্যাট করতে নামা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স শুরুতেই হারায় দলের সবচাইতে সফল ব্যাটসম্যান লিটন দাশকে। রানের খাতা খোলা হয়নি তার। তবে দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক ইমরুল কায়েস এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান মিলে যোগ করেন ৪৭ রান। ৩৩ রান করা ইমরুলকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন নাসির হোসেন। রিজওয়ানের সাথে যোগ দিয়ে ক্যারিবীয়ান ব্যাটসম্যান জনসন চার্লস রানের চাকা সচল রাখেন। তবে ৪০ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি দুজন মিলে। এরপর রিজওয়ানের সাথে যোগ দেন আরেক পাকিস্তানী খুশদিল শাহ। আর তাতেই কুমিল্লার স্কোর বোর্ড ঘুরতে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে।

বিশেষ করে খুশদিল শাহ যেন ঝড় বইয়ে দিচ্ছিলেন ঢাকার বোলারদের উপর। আফগান স্পিনার আমির হামজার করা ইনিংসের ১৬ তম ওভার থেকে খুশদিল শাহ তুলে নেন ২৯ রান। যেখানে তিনটি ছক্কা মারেন তিনি। মুক্তার আলির করা পরের ওভার থেকে নেন ২০ রান। দুই ওভারে আসে ৪৯ রান। শেষ পর্যন্ত সৌম্য সরকার ফিরিয়েছেন খুশদিল শাহকে। তবে ততক্ষণে ২৪ বলে ৬৪ রান তুলে ফেলেছেন তিনি ৭টি চার এবং ৫টি ছক্কার সাহায্যে। ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। যা এবারের বিপিএলে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফেরাতেই পারেনি ঢাকা ডমিনেটরসের বোলাররা। ৪৭ বলে ৫৫ রান করে অপরাজিত থাকেন এই পাকিস্তানি। আর তাতেই কুমিল্লার ইনিংস গিয়ে দাঁড়ায় ১৮৪ রানে।

১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা যেমন করা উচিত তেমনটি করতে পারেনি ঢাকা মোটেও। তার উপর শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে ঢাকা। উদ্বোধনী জুটিতে ১১ রান এলেও সেখানে সৌম্য সরকারের অবদান শূন্য। একই সংখ্যক বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ইংলিশ ক্রিকেটার রবিন দাশ। মোহাম্মদ মিথুনের সাথে তৃতীয় উইকেটে ২২ রান যোগ করে ফিরেন ওপেনার আহমেদ শেহজাদ। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মিথুন এবং নাসির হোসেনের ব্যাটিয়েও ছিল না জয়ের কোন তাড়না। ১০ ওভারে ৫৪ রান তোলে ঢাকা ডমিনেটরস। দুজন মিলে ৫১ রান যোগ করলেও তা দলকে জয়ের পথে নিয়ে যেতে পারেনি। ৩৬ রান করে মিথুন ফিরলে আর রান রেটের সাথে পাল্লা দিয়ে এগুতে পারেনি ঢাকার ব্যাটসম্যানরা।

নাসির এবং আরিফুল হক মিলে অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রান যোগ করলেও দলকে পারেনি। ১৫১ রানে থামে ঢাকার ইনিংস। নাসির হোসেন অপরাজিত থাকেন ৪৫ বলে ৬৬ রান করে। আর আরিফুল অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ২৪ রান করে। দুর্দান্ত ব্যাটিং করা খুশদিল শাহ জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বিসিবি পরিচালক আকরাম খান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব থেকেও
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ১১.৪৪ কোটি টাকা