জামালখানে পদ্মা সেতু!

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৬ জুন, ২০২২ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

স্বপ্নের পদ্মা সেতু যখন উদ্বোধন করছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঠিক তখন নগরবাসীর বিস্মিত চোখ জামালখান মোড়ে নির্মিত পদ্মা সেতুর রেপ্লিকার দিকে। আকারে অনেক ছোট। কিন্তু ডিজাইন আর রঙে মনে হচ্ছে, এ কী করে সম্ভব! জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন চমকই উপহার দিলেন চট্টগ্রামবাসীকে। লাল-সবুজের ইতিহাসের নতুন পরিচয়, নতুন গর্ব, নতুন অহংকারের নাম পদ্মা সেতু। গতকাল সেতুর উদ্বোধনের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং পদ্মাপাড়ের মানুষের সাথে চট্টগ্রামবাসীর একাত্মতা প্রকাশের দৃষ্টান্ত স্থাপনে শৈবাল দাশ সুমন ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে আজাদীকে জানান।

জামালখানে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা দেখতে সকাল থেকেই ভিড় করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দেখতে আসছে রেপ্লিকাটি। এতে নিখুঁতভাবে ফুটে উঠেছে পদ্মা সেতুর অবয়ব।

রেপ্লিকা দেখতে আসা যুবক আবির হোসাইন বলেন, জামালখান মোড়ে পদ্মা সেতু বসানো হচ্ছে, ফেসবুকে এমন খবর দেখে হালিশহর থেকে এসেছি। এটি দেখতে প্রায় পদ্মা সেতুর মতো।

স্থানীয় আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থী ইরফান বলেন, সকালে স্কুলে আসার সময় পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি করা স্থাপনাটি চোখে পড়ে। স্কুল ছুটির পর দেখতে এসেছি। মনে হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাছেই দাঁড়িয়ে আছি।

পদ্মা সেতুর রেপ্লিকার সঙ্গে ছবি তোলা সারোয়ার আলম বলেন, এই পথ দিয়ে চেরাগী পাহাড়ের দিকে রিকশা করে যাচ্ছিলাম। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনও আজ। তাই নেমে ছবি তুলেছি।

কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, আমাদের একটি স্লোগান ছিল ‘বাংলাদেশ দেখবে জামালখান’। চট্টগ্রামে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা করাও সেই স্লোগানের বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের অনেক মানুষ আছেন যারা পদ্মা সেতু দেখতে যেতে পারবেন না। অনেকে আছেন জীবনেও পদ্মা সেতু দেখতে পারবেন না। তাদের কথা চিন্তা করেই ১৫ দিন আগে জামালখান চত্বরে পদ্মা সেতুর আদলে একটি রেপ্লিকা বসানোর পরিকল্পনা নিই। শেঠ প্রপার্টিজের আর্থিক সহায়তায় ২০ জন কারিগর পরিশ্রম করে গর্জন কাঠ ও হার্ডবোর্ডের সমন্বয়ে রেপ্লিকা সেতুটি তৈরি করেছে। স্প্যানগুলোতে ৫০টি রঙ-বেরঙের বাতি স্থাপন করা হয়েছে। এ রেপ্লিকায় স্প্যান আছে চারটা আর পিলার আছে ২০টা। সন্ধ্যার পর অবিকল পদ্মা সেতুর ইমেজ ভেসে উঠবে রেপ্লিকাটিতে। তিনি আরও বলেন, দেশের সব জাতীয় অর্জন ও আনন্দ-বেদনার সাথে জামালখানকে সম্পৃক্ত করার একটা চেষ্টা আমাদের থাকে। পদ্মা সেতু নিয়ে সারা দেশে যে উচ্ছ্বাস সেটাকেও জামালখানে ধারণ করতে চেষ্টা করেছি।

তিনি জানান, সন্ধ্যার পর লোকজনের উপস্থিতি আরও বেড়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য সাহসের কথা মানুষ জানতে পারবে এই পদ্মা সেতুর মাধ্যমে। পদ্মা সেতুর রেপ্লিকাটি দৈর্ঘ্যে ১০০ ফুট আর প্রস্থে ২০ ফুট। তিনি বলেন, আমার একটা আক্ষেপ রয়ে গেছে, এমন একটি ক্ষণে প্রিয় মালেক আংকেলকে (দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক) পাইনি। তিনি দেশের বাইরে আছেন। নয়তো জামালখানে সৌন্দর্যবর্ধনে যত কাজ হয়েছে তার প্রতিটিতেই তিনি এবং দৈনিক আজাদী প্রত্যক্ষভাবেই জড়িত ছিলেন।

গতকাল সন্ধ্যায় এই রেপ্লিকা সেতু উদ্বোধন করেন সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শেঠ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী সোলেমান আলম শেঠ, মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক চন্দন ধর, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা জামশেদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসেম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মিথুন বড়ুয়া, সহসভাপতি হাজী শাহাবুদ্দিন, ১ নং ইউনিট আওয়ামী লীগ সভাপতি মৃদুল দাশ, সাধারণ সম্পাদক মো. খোকন, ২ নং ইউনিট আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী মুন্সি মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহমেদ ইমু, ৩ নং ইউনিট আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক বাবুল দেব প্রমুখ। এর আগে সকালে জামালখান মোড়ে এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপভোগ করেন জামালখানবাসী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড আ. লীগ ২৫ বছর ধরে অনুমোদনহীন
পরবর্তী নিবন্ধপ্রাথমিকে ছুটি ২৮ জুন থেকে, মাধ্যমিকে ৩ জুলাই