দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড আ. লীগ ২৫ বছর ধরে অনুমোদনহীন

চলছে কার্যক্রম, গঠন করেছে ইউনিট কমিটিও অবশেষে সাংগঠনিক কমিটির অভিযোগ যাচ্ছে কেন্দ্রে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৬ জুন, ২০২২ at ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের অনুমোদন নেই দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে। তবে এই অনুমোদনহীন কমিটি সম্প্রতি ওয়ার্ডের তিনটি ইউনিট কমিটিও গঠন করেছে। চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারা গঠিত সাংগঠনিক কমিটির নেতারা ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম তদারকি করতে গিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছেন।

ইতিমধ্যে অনুমোদনহীন এই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিষয়ে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের কাছে লিখিত চিঠি দিয়েছেন ইপিজেড থানা সাংগঠনিক টিমের সমন্বয়ক ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম। চিঠিটি গত ১৬ জুন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তরে জমা দেয়া হলে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক চিঠিটি গ্রহণ করেন।

এই চিঠিতে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ৩ নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে, নগরীর সর্ববৃহৎ এই ওয়ার্ডে ১ লাখ ২৫ হাজার ভোটার এবং ৫ লাখ জনসংখ্যা রয়েছে। অথচ এতো বড় ওয়ার্ডে মাত্র ৪৫০টি ফরম বিলি করে সদস্য করে এদের দিয়ে ইউনিট কমিটি করা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি। এতে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী সদস্য পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ৪ নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ওয়ার্ড কমিটি কর্তৃক আমাদের কাছে ওয়ার্ড কমিটির যে তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে তা অনুমোদিত কোনো কমিটি নয়। এই তালিকায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কোনো স্বাক্ষর নেই। ৬৫ জনের এই কমিটির মধ্যে ১৯ জন মারা গেছেন। ১৯ জন বার্ধক্যজনিত কারণে নিষ্ক্রিয় এবং বাকি ২৭ জন সক্রিয় আছেন। দীর্ঘ ২৫/২৬ বছর যাবৎ একটি অননুমোদিত কমিটি কীভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পালন করেছেন তা আমাদের কারো বোধগম্য নয়।

অনুমোদনহীন এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কমিটির প্রথমে সভাপতি ছিলেন মো. হারুণ অর রশিদ, আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শফিউল আলম। বর্তমানে হারুণ অর রশিদ ওয়ার্ড সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করে ইপিজেড থানা আওয়ামী লীগের আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তার স্থলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কমিটির সহ সভাপতি সুলতান নাছির উদ্দিন। অপরদিকে কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলমের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঐ কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন।

এদিকে অনুমোদনহীন এ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্তৃক সম্প্রতি গঠিত ইউনিট কমিটি বাতিলের জন্য গত ১৪ জুন ইপিজেড থানা সাংগঠনিক টিমের সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য রোটারিয়ান মোহাম্মদ ইলিয়াছ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কর্তৃক গঠিত ইপিজেড থানার সমন্বয়কারী আবদুচ ছালামের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

এই ব্যাপারে মোহাম্মদ ইলিয়াছ আজাদীকে বলেন, আমি ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের বি ইউনিটের স্থায়ী বাসিন্দা। আমি আগে থেকেই জানতাম যে আমাদের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি মহানগর আওয়ামী লীগ কর্তৃক অনুমোদিত নয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদ্বারা গঠিত ইপিজেড থানা সাংগঠনিক টিমের সদস্য মনোনীত করার পর আমি ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাথে সাংগঠনিক বিষয়ে বেশ কয়েকবার মিটিংয়ে বসি। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাথে সংগঠনের নানান বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের অনুমোদিত কমিটির তালিকা দেখতে চাইলে তারা আমাকে যে তালিকা সরবরাহ করেছেন তাতে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কারো অনুমোদনের স্বাক্ষর নেই। একটি অনুনমোদিত কমিটি কীভাবে গত ২৫/২৬ বছর যাবত নগরীর এতো বড়ো একটি ওয়ার্ডে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করলেন এবং সম্প্রতি কেন্দ্র ঘোষিত ইউনিট কমিটি গঠন করলেন তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। অনুনমোদিত ওয়ার্ড কমিটি দ্বারা যে তিনটি ইউনিট কমিটি গঠন করা হয়েছে সেগুলোও অগঠনতান্ত্রিক। তাই ইউনিট কমিটি গুলো বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজস্থলীতে দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ১
পরবর্তী নিবন্ধজামালখানে পদ্মা সেতু!