জামাতুল আনসারের ৪৫ সদস্য এখনো নিরুদ্দেশ

| বুধবার , ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ

মাস পাঁচেকের ধারাবাহিক অভিযানে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৮ সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। তবে ৪৫ জনের মতো সদস্য এখনো আত্মগোপনে রয়েছে বলে এই এলিট ফোর্সের ভাষ্য। সোমবার কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে গোলাগুলির পর জঙ্গি সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে মাসুদ ওরফে রণবীরসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র‌্যাব। ওই অভিযান নিয়ে গতকাল ঢাকার কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামাতুল আনসারের নিরুদ্দেশ সদস্যের সংখ্যা নিয়ে ধারণা দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে জামাতুল আনসারের ৩৮ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এদের মধ্যে কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া আট তরুণের মধ্যে চারজন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত নিরুদ্দেশ ৪৫ জনের মতো। অভিযানের কারণে অনেকেই দলছুট হয়েছে। কতজন প্রশিক্ষণ নিয়ে সমতলে এসেছে, সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। র‌্যাবের ধারাবাহিক অভিযানে জঙ্গিদের সহায়তা ও সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের (বম পার্টি) ১৪ জনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কুমিল্লা ও ঢাকার সাত কলেজছাত্র গত ২৩ আগস্ট বাসা থেকে বেরিয়ে আর না ফেরায় থানায় জিডি করেছিল পরিবার। পরে ঢাকার এক তরুণ ১ সেপ্টেম্বর বাড়ি ফিরে আসেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক মাস ধরে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আত্মপ্রকাশের কথা জানতে পারে র‌্যাব। জঙ্গিবাদে জড়িয়ে গত দুই বছরে বাড়ি ছাড়া ৫৫ তরুণের খোঁজ পাওয়ার কথা গত ১০ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরেছিল র‌্যাব, তাদের মধ্যে ৩৮ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করে এই বাহিনী। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, র‌্যাব এখন পর্যন্ত যে ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, তাদের মধ্যে অক্টোবরের ওই তালিকার নিখোঁজ ব্যক্তিরা যেমন আছে, সেই তালিকার বাইরের ব্যক্তিও আছে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের কাছ থেকে র‌্যাব জানতে পেরেছে সংগঠনটির আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ। এছাড়া উগবাদী এই সংগঠনে ছয়জন শুরা সদস্য রয়েছে, যারা সংগঠনের দাওয়াতি, সামরিক, অর্থ, মিডিয়া ও উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছে। এই নতুন জঙ্গি সংগঠনের ৫৫ জন সদস্যকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ দেয় কেএনএফ। কেএনএফের প্রধান নাথান বম, সামরিক কমান্ডার কথিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ভাংচুং লিয়ান বম, আরেক নেতা মিডিয়া শাখা প্রধান কথিত লেফটেন্যান্ট কর্নেল লালজং মুই ওরফে মাওয়াইয়া এবং কথিত আরেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল লাল মুন ঠিয়াল ওরফে চির চির ময়ের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চলে।

শারীরিক কসরতের ভিডিও : র‌্যাবের পরিচালক আল মঈন জানান, সোমবার গ্রেপ্তার হওয়া রণবীরের মোবাইল ফোনে ৮ মিনিটের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। জঙ্গিরা ২০২১ সালে এই ভিডিওটি তৈরির কাজ শুরু করে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফুটেজ এই ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। ভিডিওতে তারা বেশ কিছু প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের কসরত, থাকাখাওয়াসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপেপারলেস ট্রেড এখনো স্বপ্ন
পরবর্তী নিবন্ধকেবল মায়ের পরিচয়েও স্কুলে পড়তে পারবে সন্তান